মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন

গোয়ালন্দের পদ্মা নদীতে ধরা পড়ছে পাঙ্গাশ-চিতল, এক ইলিশ বিক্রি হলো প্রায় ৭ হাজারে

Reporter Name / ১০২ Time View
Update Time : মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩১ অপরাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ ঘূর্ণিঝড় রিমেল পরবর্তী রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে বিভিন্ন ধরনের দেশীয় মাছ ধরা পড়ছে। বিশেষ করে চারদিন ধরে জেলেদের জালে পদ্মা নদীর পাঙ্গাশ, রুই, চিতল, ইলিশসহ নানা সুস্বাদু মাছ ধরা পড়ছে। আজ শুক্রবার এক জেলের জালে ছোট-বড় ৭টি পাঙ্গাশ, আরেক জেলের জালে পাঙ্গাশের পাশাপাশি একটি বড় চিতল ও একটি ইলিশ মাছও ধরা পড়ে।

গোয়ালন্দের দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা গ্রামের জেলে ফরিদ শেখ শুক্রবার সকালে নৌকায় ৬জন সঙ্গী নিয়ে পদ্মা নদীতে মাছ শিকারে বের হন। দুইবার ফেলা জালে ছোট-বড় মিলে ৭টি পাঙ্গাশ মাছ ধরা পড়ে। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাছগুলো বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন দৌলতদিয়ার ৬নম্বর ফেরি ঘাটে। স্থানীয় আড়তদার দুলাল মন্ডলের তত্বাবধানে ফেরি ঘাট সড়কে মাছের ঝুড়ি নামানোর পর তার ছেলে রেজাউল মন্ডল মাছ বিক্রি নিলামে তোলেন। ৭টি পাঙ্গাশের মধ্যে সবচেয়ে ছোটটির ওজন ছিল প্রায় ৭ কেজি এবং বড়টির ওজন ছিল প্রায় ১৬ কেজি। ছোট পাঙ্গাশটি ৮৫০ টাকা এবং বড়টি ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

নিলামে বিক্রি শেষে জেলে ফরিদ শেখ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে নদীতে বেশি মাছ ধরা পড়ছে। বিশেষ করে চারদিন ধরে প্রতিদিন ৩-৪টি করে পাঙ্গাশসহ অন্যান্য মাছ পাচ্ছেন। তাদের ফাসন বা ঘ্যাইলা জালে পাঙ্গাশ, রুই, কাতলাসহ বড় মাছ ধরা পড়ে। বৃহস্পতিবার তারা ৪টি পাঙ্গাশ মাছ পান। শুক্রবার সকালে দুইবার জাল ফেললে ৭টি পাঙ্গাশ মাছ পান। মাছের আমদানী কিছুটা বেশি হওয়ায় তুলনামূলক দাম কম যাচ্ছে। অন্যান্য সময়ের চেয়ে কেজি প্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান।

ফেরিঘাট এলাকার মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ বলেন, শুক্রবার সকালে ঘাটের উজানে পদ্মা নদীতে জাল ফেলেন স্থানীয় ছাত্তার মেম্বার পাড়ার জেলে আরিফ হালদার। তার কারেন্ট জালে একটি বড় চিতল ও একটি বড় ইলিশ মাছ ধরা পড়ে। মাছ দুটি পাওয়ার পর আরিফ মুঠোফোনে যোগাযোগ করে। ১১ কেজি ওজনের চিতল ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ১৪ হাজার টাকা এবং ১ কেজি ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশটি ৪ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে ৬ হাজার ৭০০ টাকায় কিনেন। মাছ তাঁর আড়ত ঘরে রেখে বিভিন্ন পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ করছেন। পদ্মা নদীর ইলিশের চাহিদা সব সময় বেশি থাকে। বর্তমানে ইলিশ তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে লাভ পেলেই তিনি বিক্রি করে দিবেন।

পাইকার আড়তদার রেজাউল মন্ডল বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমেল পরবর্তী পদ্মা নদীতে বিভিন্ন মাছ ধরা পড়ছে। বিশেষ করে পাঙ্গাশ বেশি ধরা পড়ছে। বৃহস্পতিবার তিনি ২০টি পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি করেন। শুক্রবার সকালে ৭টি পাঙ্গাশসহ অন্যান্য মাছ বিক্রি করেন। অথচ এক সপ্তাহ আগেও সারাদিন ২টি পাঙ্গাশ মাছ পাওয়া যায়নি। মাছের আমদানি বেশি হওয়ায় অন্যান্য সময়ের চেয়ে দামও তুলনামূলক কম যাচ্ছে।

গোয়ালন্দের অতিরিক্ত দায়িতপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজিব বলেন, বর্তমানে পদ্মা নদীতে পানি বাড়ছে। পানি বাড়লে মাছের আনাগোনা বাড়ে, ধরাও পড়ে। এটা আমাদের পাশাপাশি জেলেদের জন্যও ইতিবাচক। নদীর গভীরতা বাড়ানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগ প্রয়োজন।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.