০৪:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথঃ দুই মাস পর লঞ্চ চলাচল শুরু, মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব

রাজবাড়ীমেইল ডেস্কঃ দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে আজ রোববার থেকে পুনরায় লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। লঞ্চে ওঠার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করা হলেও ভিতরে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এছাড়া এখনো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ রাজধানীর দিকে ছুটছে।

রোববার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে দেখা যায়, গণপরিবহন চালু না হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন ছোট বা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌছসে। আবার অনেক ছোট গাড়ি নদী পাড়ি দিতে ফেরিতে ওঠার জন্য লম্বা লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছে। পাঁচ নম্বর ফেরিঘাট বিকল্প সড়কজুড়ো এক কিলোমিটারের বেশি লম্বা লাইনে শুধু ছোট গাড়ির সারি ছিল। এছাড়া মানুষজন বিভিন্ন উপায়ে ফেরিতে করে নদী পাড়ি দিচ্ছে। একইভাবে দক্ষিণাঞ্চলগামী মানুষজন নদী পাড়ি দিয়ে আসছে। এসব মানুষ জনের ভিতর সামাজিক দূরত্বের তেমন বালাই ছিল না। তবে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল খবর তেমন জানা না থাকায় বেশিরভাগ মানুষ ফেরিতে নদী পাড়ি দিচ্ছে। পুলিশ এসব মানুষকে ভাগ হয়ে লঞ্চে নদী পাড়ি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।

লঞ্চ ঘাটে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর লঞ্চ চালু হলেও ঘাটে তেমন ভিড় ছিল না। পন্টুনের সাথে হাতে গোনা কয়েকটি লঞ্চ বেধে রাখতে দেখা যায়। এসময় বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক বিভাগ ও থানা পুলিশকে লঞ্চে ওঠার আগে আগত যাত্রীদের হাত ধুইয়ে লঞ্চে ওঠার পরামর্শ দিচ্ছেন। একই সাথে যাদের মুখে মাস্ক নেই অনেক সময় তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে দেখা যায়। তবে লঞ্চে ওঠার পর সামাজিক দূরত্ব ঠিকমতো মানা হচ্ছিল না। লঞ্চের ভিতর ও বাইরে সবাই একত্রে একজনের শরীরের সাথে আরেকজনের শরীর ঘেঁসে দাড়িয়ে ও বসে থাকতে দেখা যায়।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, টানা ৬৬দিন পর লঞ্চ চালু হয়েছে। লঞ্চ চালুর প্রচার না হওয়ায় এবং গণপরিবহন না চলায় যাত্রীর চাপ নেই। যাত্রীদের লঞ্চে ওঠার আগে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাথে জীবাণুনাশক স্প্রে প্রদান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। সোমবার থেকে গণপরিবহন চালু হলে যাত্রী চাপ বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।

উপস্থিত বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক আফতাব উদ্দিন হ্যান্ড মাইক দিয়ে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে ওঠার অনুরোধ করছেন। লঞ্চে ওঠার পর একজন আরেকজন ঘা ঘেঁসে থাকা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অনুরোধ করছি। এরপর লঞ্চে ওঠার পর যদি একজন আরেকজনের গা ঘেঁসে থাকে এক্ষেত্রে কি করতে পারি?

দুই ঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকির দায়িত্বে ছিলেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, ছোট ফেরিতে ৫০ জন এবং বড় ফেরিতে ১০০ জনের যাত্রী তোলার নিশ্চিত করছি। কিন্তু মাঝেমধ্যে যাত্রীদের ভিড় বেড়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে পড়ে। লঞ্চ ঘাটেও একজন এস.আইসহ পুলিশ রয়েছে। সেখানেও নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় পণ্যবাহি ও ছোট গাড়ি মিলে প্রায় ২২০০ গাড়ি পার হয়েছে। রাতে গাড়ির চাপ তেমন না থাকলেও ভোর থেকে ছোট গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। ফলে বেলা বাড়ার সাথে ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হয়। তবে সোমবার থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু হলে চাপ বাড়তে পারে।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথঃ দুই মাস পর লঞ্চ চলাচল শুরু, মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব

পোস্ট হয়েছেঃ ১১:০৬:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ মে ২০২০

রাজবাড়ীমেইল ডেস্কঃ দীর্ঘ দুই মাসেরও বেশি সময় পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে আজ রোববার থেকে পুনরায় লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। লঞ্চে ওঠার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করা হলেও ভিতরে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। এছাড়া এখনো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ রাজধানীর দিকে ছুটছে।

রোববার দুপুরে দৌলতদিয়া ঘাটে দেখা যায়, গণপরিবহন চালু না হওয়ায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন ছোট বা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে পৌছসে। আবার অনেক ছোট গাড়ি নদী পাড়ি দিতে ফেরিতে ওঠার জন্য লম্বা লাইন দিয়ে অপেক্ষা করছে। পাঁচ নম্বর ফেরিঘাট বিকল্প সড়কজুড়ো এক কিলোমিটারের বেশি লম্বা লাইনে শুধু ছোট গাড়ির সারি ছিল। এছাড়া মানুষজন বিভিন্ন উপায়ে ফেরিতে করে নদী পাড়ি দিচ্ছে। একইভাবে দক্ষিণাঞ্চলগামী মানুষজন নদী পাড়ি দিয়ে আসছে। এসব মানুষ জনের ভিতর সামাজিক দূরত্বের তেমন বালাই ছিল না। তবে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছে। অধিকাংশ মানুষ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল খবর তেমন জানা না থাকায় বেশিরভাগ মানুষ ফেরিতে নদী পাড়ি দিচ্ছে। পুলিশ এসব মানুষকে ভাগ হয়ে লঞ্চে নদী পাড়ি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।

লঞ্চ ঘাটে দেখা যায়, দীর্ঘদিন পর লঞ্চ চালু হলেও ঘাটে তেমন ভিড় ছিল না। পন্টুনের সাথে হাতে গোনা কয়েকটি লঞ্চ বেধে রাখতে দেখা যায়। এসময় বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক বিভাগ ও থানা পুলিশকে লঞ্চে ওঠার আগে আগত যাত্রীদের হাত ধুইয়ে লঞ্চে ওঠার পরামর্শ দিচ্ছেন। একই সাথে যাদের মুখে মাস্ক নেই অনেক সময় তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে দেখা যায়। তবে লঞ্চে ওঠার পর সামাজিক দূরত্ব ঠিকমতো মানা হচ্ছিল না। লঞ্চের ভিতর ও বাইরে সবাই একত্রে একজনের শরীরের সাথে আরেকজনের শরীর ঘেঁসে দাড়িয়ে ও বসে থাকতে দেখা যায়।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, টানা ৬৬দিন পর লঞ্চ চালু হয়েছে। লঞ্চ চালুর প্রচার না হওয়ায় এবং গণপরিবহন না চলায় যাত্রীর চাপ নেই। যাত্রীদের লঞ্চে ওঠার আগে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাথে জীবাণুনাশক স্প্রে প্রদান ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হচ্ছে। সোমবার থেকে গণপরিবহন চালু হলে যাত্রী চাপ বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।

উপস্থিত বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক আফতাব উদ্দিন হ্যান্ড মাইক দিয়ে যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে ওঠার অনুরোধ করছেন। লঞ্চে ওঠার পর একজন আরেকজন ঘা ঘেঁসে থাকা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার অনুরোধ করছি। এরপর লঞ্চে ওঠার পর যদি একজন আরেকজনের গা ঘেঁসে থাকে এক্ষেত্রে কি করতে পারি?

দুই ঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকির দায়িত্বে ছিলেন গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান। তিনি বলেন, ছোট ফেরিতে ৫০ জন এবং বড় ফেরিতে ১০০ জনের যাত্রী তোলার নিশ্চিত করছি। কিন্তু মাঝেমধ্যে যাত্রীদের ভিড় বেড়ে গেলে নিয়ন্ত্রণ করা মুশকিল হয়ে পড়ে। লঞ্চ ঘাটেও একজন এস.আইসহ পুলিশ রয়েছে। সেখানেও নিয়ন্ত্রণ রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ বলেন, গত ২৪ ঘন্টায় পণ্যবাহি ও ছোট গাড়ি মিলে প্রায় ২২০০ গাড়ি পার হয়েছে। রাতে গাড়ির চাপ তেমন না থাকলেও ভোর থেকে ছোট গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। ফলে বেলা বাড়ার সাথে ফেরি সংখ্যা বাড়ানো হয়। তবে সোমবার থেকে গণপরিবহন চলাচল শুরু হলে চাপ বাড়তে পারে।