০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজবাড়ীতে তরুণীকে বাড়ীতে রেখে ৯ মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা

হেলাল মাহমুদঃ রাজবাড়ীতে ঠাকুর ও ভগবানকে সাক্ষী রেখে কপালে সিঁদুর পড়িয়ে বিয়ের নাটক সাজিয়ে হরিজন পল্লীর সুন্দরী এক তরুণীকে ৯মাস ধরে ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতা করার অভিযোগে সনাতন ধর্মের একই পরিবারের ৩জনের নামে মামলা হয়েছে। গত ৮নভেম্বর ওই তরুণী রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় শহরের ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা তন্ময় দে (২৪) ও তার বাবা তপন দে এবং মা শ্যামা দে কে আসামী করা হয়েছে।

ওই তরুণী জানায়, সে রাজবাড়ী সরকারী কলেজের ডিগ্রী দি¦তীয় বর্ষের ছাত্রী। পাশাপাশি সে রাজবাড়ীর খলিফা পট্টিতে টিআইবি কার্যালয়ে ক্লিনারের কাজ করতো। গত দুই বছর আগে তন্ময়ের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে সে নিচুজাতের মেয়ে জেনেও তন্ময় তার সাথে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর থেকে তন্ময় তাকে মোটর সাইকেলে বিভিন্ন স্থানে বেড়ানোসহ ও রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেত। খরচের পুরো টাকাও তন্ময় তার কাছ থেকে নিতো।

২৮ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে তন্ময় তাকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর তন্ময় তাকে বাড়ীতে থাকা মন্দিরের কাছে নিয়ে ঠাকুর ও ভগবানকে সাক্ষী করে কপালে সিঁদুর পড়িয়ে বলে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তখন সে তন্ময়কে বলে এভাবে বিয়ে হয় নাকি? বিয়েতে সাক্ষী লাগে, রেজিষ্ট্রি লাগে। তখন তন্ময় তাকে আশ^স্ত করে ঠাকুর ও ভগবানের উপরে কোন সাক্ষী আছে নাকি? আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে, পড়ে রেজিষ্ট্রি করে নিব। এরপর ওই দিনই তন্ময় তাকে ধর্ষণ করে। তন্ময়ের বাবা-মা নাচগানের শিক্ষক। তারা প্রায় প্রতিদিনিই বাড়ীতে থাকতো না। এ সুযোগে তন্ময় প্রতি সপ্তাহে দুই তিন দিন তাকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করতো।

কিছুদিন পর তন্ময়ের বাবা-মা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে বাড়ীতে নিয়ে বুঝিয়ে বলে তুমি আমাদের বাড়ীতে থাকো, বিষয়টি কাউকে বলো না। কারন তোমাদের জাত আলাদা। আমাদের মান সম্মান থাকবে না। কিছুদিন চুপ থাকো। তারপর তোমাদের বিয়ের স্বীকৃতি দিবো। এরপর থেকে সে ওই বাড়ীতে থাকতো এবং তন্ময় তাকে প্রতিদিন ধর্ষণ করতো। এরমধ্যে একবার সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে তন্ময় তাকে ওষুধ খাওয়ায়ে পেটের বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে। তন্ময়ের বাড়ীতে সে প্রায় ৯/১০মাস ছিল। এরমধ্যে সে অনেকবার তাকে রেজিষ্ট্রি মুলে বিয়ের কথা বলেছে। কিন্তু তন্ময় ও তার বাবা মা কর্ণপাত করেনি। গত অক্টোবর মাসে তাকে ওই বাড়ী থেকে বের করে দেয় তন্ময় ও তার বাবা মা। উপায় না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় বিচার না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলে জানায় ওই তরুণী।

রাজবাড়ী শহরের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান দোলনচাপা সঙ্গীতাঙ্গনের সভাপতি তন্ময়ের বাবা তপন দে বলেন, প্রায় ১০ মাস ধরে ওই মেয়ে আমাদের বাড়ীতে ছিল। তবে ধর্ষণের ঘটনা মিথ্যা। ওই মেয়ে গান শিখতো। সেখান থেকে আমি তাকে চিনতাম। সে মেসে থাকতো। সে আমাদের বাবা-মা ডেকে ছিলো। আমার বাড়ীতে থাকতে চেয়েছিল বলেই তাকে আশ্রয় দিয়ে ছিলাম। তন্ময়কে সে ভাইয়া বলে ডাকতো। এখন সে কি কারণে মামলা দিলো বুঝতে পারছি না। এদিকে মামলার পর থেকে তন্ময় পলাতক রয়েছে।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

রাজবাড়ীতে তরুণীকে বাড়ীতে রেখে ৯ মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলা

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:৪৫:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ নভেম্বর ২০২০

হেলাল মাহমুদঃ রাজবাড়ীতে ঠাকুর ও ভগবানকে সাক্ষী রেখে কপালে সিঁদুর পড়িয়ে বিয়ের নাটক সাজিয়ে হরিজন পল্লীর সুন্দরী এক তরুণীকে ৯মাস ধরে ধর্ষণ ও ধর্ষণের সহযোগিতা করার অভিযোগে সনাতন ধর্মের একই পরিবারের ৩জনের নামে মামলা হয়েছে। গত ৮নভেম্বর ওই তরুণী রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় শহরের ভবানীপুর এলাকার বাসিন্দা তন্ময় দে (২৪) ও তার বাবা তপন দে এবং মা শ্যামা দে কে আসামী করা হয়েছে।

ওই তরুণী জানায়, সে রাজবাড়ী সরকারী কলেজের ডিগ্রী দি¦তীয় বর্ষের ছাত্রী। পাশাপাশি সে রাজবাড়ীর খলিফা পট্টিতে টিআইবি কার্যালয়ে ক্লিনারের কাজ করতো। গত দুই বছর আগে তন্ময়ের সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে সে নিচুজাতের মেয়ে জেনেও তন্ময় তার সাথে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর থেকে তন্ময় তাকে মোটর সাইকেলে বিভিন্ন স্থানে বেড়ানোসহ ও রেস্টুরেন্টে নিয়ে যেত। খরচের পুরো টাকাও তন্ময় তার কাছ থেকে নিতো।

২৮ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে তন্ময় তাকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর তন্ময় তাকে বাড়ীতে থাকা মন্দিরের কাছে নিয়ে ঠাকুর ও ভগবানকে সাক্ষী করে কপালে সিঁদুর পড়িয়ে বলে আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে। তখন সে তন্ময়কে বলে এভাবে বিয়ে হয় নাকি? বিয়েতে সাক্ষী লাগে, রেজিষ্ট্রি লাগে। তখন তন্ময় তাকে আশ^স্ত করে ঠাকুর ও ভগবানের উপরে কোন সাক্ষী আছে নাকি? আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে, পড়ে রেজিষ্ট্রি করে নিব। এরপর ওই দিনই তন্ময় তাকে ধর্ষণ করে। তন্ময়ের বাবা-মা নাচগানের শিক্ষক। তারা প্রায় প্রতিদিনিই বাড়ীতে থাকতো না। এ সুযোগে তন্ময় প্রতি সপ্তাহে দুই তিন দিন তাকে বাড়ীতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করতো।

কিছুদিন পর তন্ময়ের বাবা-মা বিষয়টি জানতে পেরে তাকে বাড়ীতে নিয়ে বুঝিয়ে বলে তুমি আমাদের বাড়ীতে থাকো, বিষয়টি কাউকে বলো না। কারন তোমাদের জাত আলাদা। আমাদের মান সম্মান থাকবে না। কিছুদিন চুপ থাকো। তারপর তোমাদের বিয়ের স্বীকৃতি দিবো। এরপর থেকে সে ওই বাড়ীতে থাকতো এবং তন্ময় তাকে প্রতিদিন ধর্ষণ করতো। এরমধ্যে একবার সে গর্ভবতী হয়ে পড়লে তন্ময় তাকে ওষুধ খাওয়ায়ে পেটের বাচ্চা নষ্ট করে ফেলে। তন্ময়ের বাড়ীতে সে প্রায় ৯/১০মাস ছিল। এরমধ্যে সে অনেকবার তাকে রেজিষ্ট্রি মুলে বিয়ের কথা বলেছে। কিন্তু তন্ময় ও তার বাবা মা কর্ণপাত করেনি। গত অক্টোবর মাসে তাকে ওই বাড়ী থেকে বের করে দেয় তন্ময় ও তার বাবা মা। উপায় না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করে। এ ঘটনায় বিচার না হলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না বলে জানায় ওই তরুণী।

রাজবাড়ী শহরের সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান দোলনচাপা সঙ্গীতাঙ্গনের সভাপতি তন্ময়ের বাবা তপন দে বলেন, প্রায় ১০ মাস ধরে ওই মেয়ে আমাদের বাড়ীতে ছিল। তবে ধর্ষণের ঘটনা মিথ্যা। ওই মেয়ে গান শিখতো। সেখান থেকে আমি তাকে চিনতাম। সে মেসে থাকতো। সে আমাদের বাবা-মা ডেকে ছিলো। আমার বাড়ীতে থাকতে চেয়েছিল বলেই তাকে আশ্রয় দিয়ে ছিলাম। তন্ময়কে সে ভাইয়া বলে ডাকতো। এখন সে কি কারণে মামলা দিলো বুঝতে পারছি না। এদিকে মামলার পর থেকে তন্ময় পলাতক রয়েছে।