০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিজ বুদ্ধিমত্তায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল নবম শ্রেনীর স্কুলছাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজ বুদ্ধিমত্তায় অপহরণকারী চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে নবম শ্রেনীর স্কুলছাত্রী জান্নাতুল নেছা তানহা (১৪)। সে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের নছর উদ্দিন সরদার পাড়ার এলেম মৃধা ও ফরিদা খাতুন দম্পতির একমাত্র মেয়ে। তানহা গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী।

গত রোববার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকালে বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে উজানচর ইউনিয়নের কুন্ডুপাড়া খালু মিরাজের বাড়ি খালাতো ভাইয়ের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। পথিমধ্যে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ রেলগেট থেকে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারী) বাড়িতে আলাপকালে তানহা জানায়, রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বের হই। মাঝপথে গোয়ালন্দ রেলগেট পার হওয়ার পর স্থানীয় আব্দুল মান্নানের বহুতল ভবনের সামনে নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস পথরোধ করে। মাইক্রোবাসে বোরকা পড়া এক যুবতী ও তিন তরুণ ছিল। ওই নারী নাম জিজ্ঞাসা করে আচমকা টান দিয়ে গাড়িতে তুলেই দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের দিকে রওয়ানা করে। এসময় কাঁধ থেকে স্কুল ব্যাগটি পড়ে যায়। তাকে মাঝে রেখে ডানপাশে ওই নারী এবং বাম পাশে এক তরুণ বসা ছিল। এরপর সে অচেতন হয়ে পড়ে।

তানহা জানায়, দুপুর বারোটার দিকে নবীনগর মাইক্রোবাস থামায়। জ্ঞান ফিরলে দেখতে পায় ওই নারী ডান হাত ধরে আছেন। বাম পাশের তরুণ নেই, গাড়ির দরজা খোলা। সে মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে নেমেই দৌড় দিয়ে স্থানীয় এক চায়ের দোকানে আশ্রয় নেয়। এসময় স্থানীয় বয়স্ক এক ব্যক্তির কাছে ঘটনাটি খুলে বলি। চক্রের সদস্যরা কিছুদূর পথ পিছু নিয়ে কেটে পড়ে। পরে ওই ব্যক্তি তানহার বাবা-মাকে ফোনে বিষয়টি জানান। রাতেই বাবা-মার সাথে বাড়িতে ফিরে আসে তানহা।

নবীনগর পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার অনামিকা হেয়ার ড্রেসার সেলুন এর সত্ত্বাধিকারী স্বপন চন্দ্র শীল বলেন, আমি চা খাচ্ছিলাম। এসময় অল্প বয়সের ওই মেয়েকে আতঙ্কগ্রস্ত দেখে কি হয়েছে জানতে চাইলাম। পরে বিষয়টি খুলে বললে তার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে বাবা-মাকে ফোনে জানায়।

মা ফরিদা খাতুন জানান, বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে না আসায় বোনের কাছে ফোন করে জানতে পারেন প্রাইভেট পড়তে যায়নি। তখন সবাই বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিতে থাকলে পথিমধ্যে স্কুল ব্যাগ পড়ে থাকার বিষয়টি জানতে পেরে ধারণা করে অপহরণ করা হয়েছে। তাৎক্ষনিক ৯৯৯-এ ফোন করে জানানো হলে গোয়ালন্দ ঘাট থানাকে অবগত করা হয়।

বাবা এলেম মৃধা বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত নবীনগর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় পৌছে আমার তানহাকে পাই। আমার একমাত্র মেয়ে অল্পের জন্য রক্ষা পায়। কিন্তু দিনের বেলায় মহাসড়ক থেকে এভাবে তুলে নেয়ায় মেয়েকে নিরাপদে পড়ানো নিয়ে তিনি শঙ্কায় আছেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে স্কুলছাত্রীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপরও আমি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

নিজ বুদ্ধিমত্তায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল নবম শ্রেনীর স্কুলছাত্রী

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজ বুদ্ধিমত্তায় অপহরণকারী চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে নবম শ্রেনীর স্কুলছাত্রী জান্নাতুল নেছা তানহা (১৪)। সে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩নম্বর ওয়ার্ডের নছর উদ্দিন সরদার পাড়ার এলেম মৃধা ও ফরিদা খাতুন দম্পতির একমাত্র মেয়ে। তানহা গোয়ালন্দ শহীদ স্মৃতি সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্রী।

গত রোববার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকালে বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে উজানচর ইউনিয়নের কুন্ডুপাড়া খালু মিরাজের বাড়ি খালাতো ভাইয়ের কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। পথিমধ্যে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ রেলগেট থেকে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা।

মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারী) বাড়িতে আলাপকালে তানহা জানায়, রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বের হই। মাঝপথে গোয়ালন্দ রেলগেট পার হওয়ার পর স্থানীয় আব্দুল মান্নানের বহুতল ভবনের সামনে নীল রঙের একটি মাইক্রোবাস পথরোধ করে। মাইক্রোবাসে বোরকা পড়া এক যুবতী ও তিন তরুণ ছিল। ওই নারী নাম জিজ্ঞাসা করে আচমকা টান দিয়ে গাড়িতে তুলেই দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের দিকে রওয়ানা করে। এসময় কাঁধ থেকে স্কুল ব্যাগটি পড়ে যায়। তাকে মাঝে রেখে ডানপাশে ওই নারী এবং বাম পাশে এক তরুণ বসা ছিল। এরপর সে অচেতন হয়ে পড়ে।

তানহা জানায়, দুপুর বারোটার দিকে নবীনগর মাইক্রোবাস থামায়। জ্ঞান ফিরলে দেখতে পায় ওই নারী ডান হাত ধরে আছেন। বাম পাশের তরুণ নেই, গাড়ির দরজা খোলা। সে মহিলাকে ধাক্কা দিয়ে গাড়ি থেকে নেমেই দৌড় দিয়ে স্থানীয় এক চায়ের দোকানে আশ্রয় নেয়। এসময় স্থানীয় বয়স্ক এক ব্যক্তির কাছে ঘটনাটি খুলে বলি। চক্রের সদস্যরা কিছুদূর পথ পিছু নিয়ে কেটে পড়ে। পরে ওই ব্যক্তি তানহার বাবা-মাকে ফোনে বিষয়টি জানান। রাতেই বাবা-মার সাথে বাড়িতে ফিরে আসে তানহা।

নবীনগর পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার অনামিকা হেয়ার ড্রেসার সেলুন এর সত্ত্বাধিকারী স্বপন চন্দ্র শীল বলেন, আমি চা খাচ্ছিলাম। এসময় অল্প বয়সের ওই মেয়েকে আতঙ্কগ্রস্ত দেখে কি হয়েছে জানতে চাইলাম। পরে বিষয়টি খুলে বললে তার কাছ থেকে নাম্বার নিয়ে বাবা-মাকে ফোনে জানায়।

মা ফরিদা খাতুন জানান, বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফিরে না আসায় বোনের কাছে ফোন করে জানতে পারেন প্রাইভেট পড়তে যায়নি। তখন সবাই বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিতে থাকলে পথিমধ্যে স্কুল ব্যাগ পড়ে থাকার বিষয়টি জানতে পেরে ধারণা করে অপহরণ করা হয়েছে। তাৎক্ষনিক ৯৯৯-এ ফোন করে জানানো হলে গোয়ালন্দ ঘাট থানাকে অবগত করা হয়।

বাবা এলেম মৃধা বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত নবীনগর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় পৌছে আমার তানহাকে পাই। আমার একমাত্র মেয়ে অল্পের জন্য রক্ষা পায়। কিন্তু দিনের বেলায় মহাসড়ক থেকে এভাবে তুলে নেয়ায় মেয়েকে নিরাপদে পড়ানো নিয়ে তিনি শঙ্কায় আছেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে স্কুলছাত্রীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপরও আমি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো।