০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতদিয়ায় ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি হলো ৩৮ কেজির আরেকটি বিপন্ন বাগাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় আজ শনিবার দুপুরে প্রায় ৩৮ কেজি ওজনের আরেকটি বিপন্ন বাগাড় মাছ বিক্রি হয়েছে। এর আগে বাগাড়টি সকাল ৯টার দিকে পাবনা অঞ্চলের জেলেদের জালে ধরা পড়ে। বাবু সরদারের আড়ত থেকে নিলামে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৯ হাজার ৪০০ টাকায় কিনেন মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ। পরে দুপুরে ঢাকার এক ব্যবসায়ী ৫১ হাজার টাকায় কিনে নেন।

বাগাড় একটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ। এ ধরনের মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলেও গোয়ালন্দের পদ্মা নদীতে মাঝে মধ্যে ধরা পড়ছে বিপন্ন প্রজাতির বাগাড়। দৌলতদিয়া ঘাটে প্রকাশ্য নিলামে হাঁকডাক ছেড়ে বিক্রি করা হয়। এ ধরনের মাছ স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগ করে বিক্রি করছেন।

রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলেরা এ অঞ্চলে এসে মাছ শিকার করেন। পদ্মা এবং যমুনা নদীর মিলনস্থল গোয়ালন্দ হওয়ায় অধিকাংশ বড় মাছ এখানেই ধরা পড়ে। অর্ধশত ইঞ্জিন চালিত বড় নৌকা ফেরি ঘাটের অদূরে বাহির চর দৌলতদিয়া থেকে পর্যায়ক্রমে ছাড়ে। জেলেরা জাল নদীতে ফেলতে ফেলতে ভাটির দিকে ভাসতে থাকে। ওই জাল গোটানোর সময় বড় মাছ ধরা পড়ে।

স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবী জানান, শনিবার সকাল ৯টার দিকে পাবনার ঢালারচর এলাকার জেলে আক্কাছ শেখ বাহির চর দৌলতদিয়া থেকে জাল ফেলা শুরু করে। প্রায় ৭ কিলোমিটার ভাটিতে যাওয়া মাত্র জালে টান আঁচ করতে পারে। জাল গুটিয়ে নৌকায় তুলতেই দেখেন বড় এক বাগাড়। দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরি ঘাটে আনলে আড়তদার বাবু সরদার ওজন দিয়ে দেখেন ৩৮ কেজি হয়েছে। পরে নিলামে তুললে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরি ঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ কিনেন।

শাহজাহান শেখ বলেন, সকাল ১০টার দিকে নদীতে বড় বাগাড় মাছ ধরা পড়ার খবর পাই। ৬ নম্বর ফেরি ঘাটে বাগাড়টি নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৯ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে নেই। ঢাকার গুলশান এলাকার মনির খান নামের ঠিকাদারের কাছে কেজি প্রতি ৫০ টাকায় লাভে ৫১ হাজার ৩০০ টাকায় মুঠোফোনে বিক্রি করি।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বন্য প্রাণী (সংলক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিলে বাগাড় মাছকে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বন্য প্রাণী (সংলক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ সালের জানুযারী বিপন্ন প্রাণী ধরা বা কেনাবেচা দ-নীয় অপরাধ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের লাল তালিকায়ও রয়েছে বাগাড় মাছের নাম।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহ মো. শাহারিয়ার জামান বলেন, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছোট বাগাড় মাছ ধরা যাবে না। তবে বড় বাগাড় মাছ ধরা বা খাওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোন সমস্যা নেই। বাগাড়কে বিপন্ন মাছ হিসেবে চিহিৃত করে তা ধরতে কোন নিষেধাজ্ঞা এখন পর্যন্ত তাঁদের কাছে আসেনি বলে তিনি দাবী করেন।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

দৌলতদিয়ায় ৫১ হাজার টাকায় বিক্রি হলো ৩৮ কেজির আরেকটি বিপন্ন বাগাড়

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:১৯:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় আজ শনিবার দুপুরে প্রায় ৩৮ কেজি ওজনের আরেকটি বিপন্ন বাগাড় মাছ বিক্রি হয়েছে। এর আগে বাগাড়টি সকাল ৯টার দিকে পাবনা অঞ্চলের জেলেদের জালে ধরা পড়ে। বাবু সরদারের আড়ত থেকে নিলামে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৯ হাজার ৪০০ টাকায় কিনেন মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ। পরে দুপুরে ঢাকার এক ব্যবসায়ী ৫১ হাজার টাকায় কিনে নেন।

বাগাড় একটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ। এ ধরনের মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলেও গোয়ালন্দের পদ্মা নদীতে মাঝে মধ্যে ধরা পড়ছে বিপন্ন প্রজাতির বাগাড়। দৌলতদিয়া ঘাটে প্রকাশ্য নিলামে হাঁকডাক ছেড়ে বিক্রি করা হয়। এ ধরনের মাছ স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগ করে বিক্রি করছেন।

রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলেরা এ অঞ্চলে এসে মাছ শিকার করেন। পদ্মা এবং যমুনা নদীর মিলনস্থল গোয়ালন্দ হওয়ায় অধিকাংশ বড় মাছ এখানেই ধরা পড়ে। অর্ধশত ইঞ্জিন চালিত বড় নৌকা ফেরি ঘাটের অদূরে বাহির চর দৌলতদিয়া থেকে পর্যায়ক্রমে ছাড়ে। জেলেরা জাল নদীতে ফেলতে ফেলতে ভাটির দিকে ভাসতে থাকে। ওই জাল গোটানোর সময় বড় মাছ ধরা পড়ে।

স্থানীয় কয়েকজন মৎস্যজীবী জানান, শনিবার সকাল ৯টার দিকে পাবনার ঢালারচর এলাকার জেলে আক্কাছ শেখ বাহির চর দৌলতদিয়া থেকে জাল ফেলা শুরু করে। প্রায় ৭ কিলোমিটার ভাটিতে যাওয়া মাত্র জালে টান আঁচ করতে পারে। জাল গুটিয়ে নৌকায় তুলতেই দেখেন বড় এক বাগাড়। দৌলতদিয়া ৬ নম্বর ফেরি ঘাটে আনলে আড়তদার বাবু সরদার ওজন দিয়ে দেখেন ৩৮ কেজি হয়েছে। পরে নিলামে তুললে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফেরি ঘাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ কিনেন।

শাহজাহান শেখ বলেন, সকাল ১০টার দিকে নদীতে বড় বাগাড় মাছ ধরা পড়ার খবর পাই। ৬ নম্বর ফেরি ঘাটে বাগাড়টি নিলামে তোলা হলে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৯ হাজার ৪০০ টাকায় কিনে নেই। ঢাকার গুলশান এলাকার মনির খান নামের ঠিকাদারের কাছে কেজি প্রতি ৫০ টাকায় লাভে ৫১ হাজার ৩০০ টাকায় মুঠোফোনে বিক্রি করি।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বন্য প্রাণী (সংলক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিলে বাগাড় মাছকে বিপন্ন প্রাণী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। বন্য প্রাণী (সংলক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ সালের জানুযারী বিপন্ন প্রাণী ধরা বা কেনাবেচা দ-নীয় অপরাধ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের লাল তালিকায়ও রয়েছে বাগাড় মাছের নাম।

এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শাহ মো. শাহারিয়ার জামান বলেন, নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ছোট বাগাড় মাছ ধরা যাবে না। তবে বড় বাগাড় মাছ ধরা বা খাওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত কোন সমস্যা নেই। বাগাড়কে বিপন্ন মাছ হিসেবে চিহিৃত করে তা ধরতে কোন নিষেধাজ্ঞা এখন পর্যন্ত তাঁদের কাছে আসেনি বলে তিনি দাবী করেন।