০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানব পাচার মামলার অন্যতম পলাতক আসামী চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় দায়েরকৃত মানব পাচার মামলার অন্যতম পলাতক আসামী আব্দুল আল মামুন ওরফে আনন্দকে (৩৪) পুলিশ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা থেকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করেছে। সে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ফার্মপাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। ২০ জানুযারী থানায় দায়েরকৃত মানব পাচার মামলার এজাহারভুক্ত ৩নম্বর আসামী হিসেবে তাকে পুলিশ সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠিয়েছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মানব পাচার মামলার অন্যতম আসামী আব্দুল আল মামুন ওরফে আনন্দ চুয়াডাঙ্গার বাড়ি অবস্থান করছে বলে জানতে পারে পুলিশ। রোববার দুপুর থেকে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান করে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় বিকেলের দিকে গ্রেপ্তার করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানায় আসেন। গত শনিবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুঞ্চি গ্রামের আমির হোসেন (৪৫) এবং গোয়ালন্দের উত্তর দৌলতদিয়া নুরু চেয়ারম্যান পাড়ার কবির হোসেন (৪২) নামের আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ১৯ জানুয়ারী রাতে যৌনপল্লিতে মামলার বাদী তরুনীর ঘরে এক খরিদ্দারের কাছে তরুনী উদ্ধারের আকুতি জানায়। সে ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি অবগত করলে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীরকে জানায়। ওসি তরুনীর সাথে ফোনে বিস্তারিত জানার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে নাজমা বেগমের বাড়ি থেকে তরুনীকে উদ্ধার করে। পাশের কক্ষ থেকে কান্নার আওয়াজ পেয়ে আরো দুইজনকে উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের তথ্যমতে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয়দফা অভিযানে নাজমার বাড়ির পাশে বিশেষভাবে তৈরী অন্ধকার কক্ষ থেকে আরো ১১ কিশোরী উদ্ধার করে।

উদ্ধারকৃত কয়েক কিশোরী-তরুনী জানায়, পারলারে, বাসা বাড়িতে কাজ দেয়ার কথা বলে ৫-৯ মাস আগে ল্লিতে বিক্রি করে। এখানে অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে সাধারণ খাবারের পাশাপাশি মোটাতাজা করনের ওষুধ খাওয়াতো। তাদের কথা মতো পতিতাবৃত্তিতে রাজি না হলে নির্যাতন করতো। কান্নার আওয়াজ যাতে কেউ না শুনতে পারে এজন্য উচ্চ শব্দে সাউন্ডবক্স বাজাতো। এমন নির্মম নির্যাতনের শিকার হতো সবাই। সবাই এ অন্ধকার জীবন থেকে উদ্ধার হয়ে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চায়।

এর আগে থানা পুলিশ গত বছর ১৬ নভেম্বর নাজমা বেগমের বাড়ি থেকে এক কিশোরী উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় নাজমাকে গ্রেপ্তার করে মানব পাচার আইনের মামলায় জেলে পাঠায়। এখন পর্যন্ত নাজমা বেগম জেলেই রয়েছেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, আব্দুল আল মামুন ওরফে আনন্দ দীর্ঘদিন দৌলতদিয়া যৌনপল্লির নাজমা বেগমের বাড়ির তত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। এ সুযোগে বিভিন্ন এলাকার অসহায় দরিদ্র পরিবারের কিশোরী-তরুনীদের চাকুরী দেবার কথা বলে পল্লিতে এনে বিক্রি করতো। এর আগে গত শনিবার রাতে মানব পাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

মানব পাচার মামলার অন্যতম পলাতক আসামী চুয়াডাঙ্গা থেকে গ্রেপ্তার

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:২১:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানায় দায়েরকৃত মানব পাচার মামলার অন্যতম পলাতক আসামী আব্দুল আল মামুন ওরফে আনন্দকে (৩৪) পুলিশ চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা থেকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করেছে। সে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ফার্মপাড়ার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। ২০ জানুযারী থানায় দায়েরকৃত মানব পাচার মামলার এজাহারভুক্ত ৩নম্বর আসামী হিসেবে তাকে পুলিশ সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠিয়েছে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মানব পাচার মামলার অন্যতম আসামী আব্দুল আল মামুন ওরফে আনন্দ চুয়াডাঙ্গার বাড়ি অবস্থান করছে বলে জানতে পারে পুলিশ। রোববার দুপুর থেকে চুয়াডাঙ্গায় অবস্থান করে স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় বিকেলের দিকে গ্রেপ্তার করে রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানায় আসেন। গত শনিবার রাজবাড়ী সদর উপজেলার ধুঞ্চি গ্রামের আমির হোসেন (৪৫) এবং গোয়ালন্দের উত্তর দৌলতদিয়া নুরু চেয়ারম্যান পাড়ার কবির হোসেন (৪২) নামের আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, গত ১৯ জানুয়ারী রাতে যৌনপল্লিতে মামলার বাদী তরুনীর ঘরে এক খরিদ্দারের কাছে তরুনী উদ্ধারের আকুতি জানায়। সে ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি অবগত করলে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীরকে জানায়। ওসি তরুনীর সাথে ফোনে বিস্তারিত জানার পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে অভিযান চালিয়ে নাজমা বেগমের বাড়ি থেকে তরুনীকে উদ্ধার করে। পাশের কক্ষ থেকে কান্নার আওয়াজ পেয়ে আরো দুইজনকে উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাদের তথ্যমতে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয়দফা অভিযানে নাজমার বাড়ির পাশে বিশেষভাবে তৈরী অন্ধকার কক্ষ থেকে আরো ১১ কিশোরী উদ্ধার করে।

উদ্ধারকৃত কয়েক কিশোরী-তরুনী জানায়, পারলারে, বাসা বাড়িতে কাজ দেয়ার কথা বলে ৫-৯ মাস আগে ল্লিতে বিক্রি করে। এখানে অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে সাধারণ খাবারের পাশাপাশি মোটাতাজা করনের ওষুধ খাওয়াতো। তাদের কথা মতো পতিতাবৃত্তিতে রাজি না হলে নির্যাতন করতো। কান্নার আওয়াজ যাতে কেউ না শুনতে পারে এজন্য উচ্চ শব্দে সাউন্ডবক্স বাজাতো। এমন নির্মম নির্যাতনের শিকার হতো সবাই। সবাই এ অন্ধকার জীবন থেকে উদ্ধার হয়ে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চায়।

এর আগে থানা পুলিশ গত বছর ১৬ নভেম্বর নাজমা বেগমের বাড়ি থেকে এক কিশোরী উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় নাজমাকে গ্রেপ্তার করে মানব পাচার আইনের মামলায় জেলে পাঠায়। এখন পর্যন্ত নাজমা বেগম জেলেই রয়েছেন।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, আব্দুল আল মামুন ওরফে আনন্দ দীর্ঘদিন দৌলতদিয়া যৌনপল্লির নাজমা বেগমের বাড়ির তত্বাবধায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিল। এ সুযোগে বিভিন্ন এলাকার অসহায় দরিদ্র পরিবারের কিশোরী-তরুনীদের চাকুরী দেবার কথা বলে পল্লিতে এনে বিক্রি করতো। এর আগে গত শনিবার রাতে মানব পাচারের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।