০৭:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৌলতদিয়া ঘাট ফাঁকা, গাড়ির জন্য ফেরির অপেক্ষা

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ পাল্টে গেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটের দৃশ্যপট। আগে প্রতিনিয়ত যানবাহনের চাপে জট লেগে থাকতো। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাড়ির লম্বা লাইন তৈরী হতো। ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো ঘন্টার পর ঘন্টা। এমনকি দুই-তিন দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হতো। সেই চিরচেনা দৃশ্য এখন অনেকটা অচেনা। বিশেষ করে পদ্মাসেতু চালুর পর দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের জট দূরের কথা লম্বা লাইন পর্যন্ত দেখা যায়না।

শুক্রবার সকালে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক একদম ফাঁকা। কাউন্টারের সামনে নেই দালালদের তৎপরতা। নেই গাড়ির জন্য টিকিট নিতে আসা গাড়ি চালক বা সহকারীদের হাঁকডাক। যানবাহনের সাথে জনশূন্য অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কাউন্টার পেরিয়ে ফেরি ও লঞ্চ ঘাট এলাকায়ও একই অবস্থা। ৪, ৫, ৬ ও ৭নম্বর ঘাটে একাধিক ফেরি দেখা গেলেও গাড়ি না থাকায় ফেরিগুলো ঘাটেই অলস সময় বসে পার করছে।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ঘাটে দুটি রো রো (বড়) ফেরি ভেড়ানো রয়েছে। একটি ফেরির কর্মচারীরা অলস বসে থাকায় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। অপর বড় ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ হামীদুর রহমানে ঘাটে নদী পাড়ি দিতে আসা দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি ওঠে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন। ফেরি ছাড়তে দেরি দেখে ওই ফেরিতে থাকা ব্যক্তিগত গাড়ি দুটি একে একে নেমে অন্য ঘাটে যাওয়ার চেষ্টা করে।

ঘাট সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বলেন, আগে প্রতিনিয়তি ঘাট এলাকাসহ মহাসড়ক ব্যস্ত থাকতো। গাড়ির সাথে স্থানীয় হকার, দালাল, পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনৈতিক সহ অনেকের ব্যস্ততা দেখা যেত। পদ্মাসেতু চালুর পর প্রায় অর্ধেক সংখ্যক গাড়ি কমে যায়। এরপর জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, দুই দফায় ফেরি ভাড়া বৃদ্ধির কারনে যানবাহনের সংখ্যা আরো কমেছে। এখন কারোর তৎপরতা নেই বললে চলে।

স্থানীয় মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন বলেন, বর্তমানে গাড়ি নেই বললেই চলে। দুপুরের পর কিছু মালবাহী গাড়ি আসতে থাকে। কিছু যাত্রীবাহি বাস মিলে ঘাটে অল্প সংখ্যক গাড়ি কিছুটা দেখা যায়। এর আগে কখনোই এরকম দেখা যায়নি। সারাদিন গাড়ির চাপ না থাকায় আমরাও এভাবে বসে থাকি। গাড়ি না থাকায় একেকটি ফেরি অনেকক্ষণ সময় পর ঘাট ছেড়ে যায়। মাঝে মধ্যে নদী পাড়ি দিতে এসে যাত্রী বা ছোট গাড়ির চালকরাও বিরক্ত প্রকাশ করে।

ঘাটে কর্তব্যরত বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর রাজু হাওলাদার বলেন, আগে ২৪ ঘন্টায় গড়ে শুধু দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার যানবাহন নদী পাড়ি দিত। এখন গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজারের মতো গাড়ি পার হয়। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রায় ৬ ঘন্টায় দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ৫২টি পণ্যবাহী গাড়ি, ১৫০টি ছোট গাড়ি এবং ৩২টির মতো যাত্রীবাহি পরিবহন পার হয়েছে। অথচ আগে সকালে মাত্র ১ ঘন্টায় ৭০০ থেকে ৮০০ মতো যানবাহন পাড় হতো।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

দৌলতদিয়া ঘাট ফাঁকা, গাড়ির জন্য ফেরির অপেক্ষা

পোস্ট হয়েছেঃ ০৬:৫৯:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ পাল্টে গেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটের দৃশ্যপট। আগে প্রতিনিয়ত যানবাহনের চাপে জট লেগে থাকতো। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাড়ির লম্বা লাইন তৈরী হতো। ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হতো ঘন্টার পর ঘন্টা। এমনকি দুই-তিন দিন পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হতো। সেই চিরচেনা দৃশ্য এখন অনেকটা অচেনা। বিশেষ করে পদ্মাসেতু চালুর পর দৌলতদিয়া ঘাটে যানবাহনের জট দূরের কথা লম্বা লাইন পর্যন্ত দেখা যায়না।

শুক্রবার সকালে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক একদম ফাঁকা। কাউন্টারের সামনে নেই দালালদের তৎপরতা। নেই গাড়ির জন্য টিকিট নিতে আসা গাড়ি চালক বা সহকারীদের হাঁকডাক। যানবাহনের সাথে জনশূন্য অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কাউন্টার পেরিয়ে ফেরি ও লঞ্চ ঘাট এলাকায়ও একই অবস্থা। ৪, ৫, ৬ ও ৭নম্বর ঘাটে একাধিক ফেরি দেখা গেলেও গাড়ি না থাকায় ফেরিগুলো ঘাটেই অলস সময় বসে পার করছে।

সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দৌলতদিয়া ৫ নম্বর ঘাটে দুটি রো রো (বড়) ফেরি ভেড়ানো রয়েছে। একটি ফেরির কর্মচারীরা অলস বসে থাকায় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করছেন। অপর বড় ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ হামীদুর রহমানে ঘাটে নদী পাড়ি দিতে আসা দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি ওঠে অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছেন। ফেরি ছাড়তে দেরি দেখে ওই ফেরিতে থাকা ব্যক্তিগত গাড়ি দুটি একে একে নেমে অন্য ঘাটে যাওয়ার চেষ্টা করে।

ঘাট সংশ্লিষ্ট কয়েকজন বলেন, আগে প্রতিনিয়তি ঘাট এলাকাসহ মহাসড়ক ব্যস্ত থাকতো। গাড়ির সাথে স্থানীয় হকার, দালাল, পুলিশ, সাংবাদিক, রাজনৈতিক সহ অনেকের ব্যস্ততা দেখা যেত। পদ্মাসেতু চালুর পর প্রায় অর্ধেক সংখ্যক গাড়ি কমে যায়। এরপর জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, দুই দফায় ফেরি ভাড়া বৃদ্ধির কারনে যানবাহনের সংখ্যা আরো কমেছে। এখন কারোর তৎপরতা নেই বললে চলে।

স্থানীয় মুদি দোকানী আলমগীর হোসেন বলেন, বর্তমানে গাড়ি নেই বললেই চলে। দুপুরের পর কিছু মালবাহী গাড়ি আসতে থাকে। কিছু যাত্রীবাহি বাস মিলে ঘাটে অল্প সংখ্যক গাড়ি কিছুটা দেখা যায়। এর আগে কখনোই এরকম দেখা যায়নি। সারাদিন গাড়ির চাপ না থাকায় আমরাও এভাবে বসে থাকি। গাড়ি না থাকায় একেকটি ফেরি অনেকক্ষণ সময় পর ঘাট ছেড়ে যায়। মাঝে মধ্যে নদী পাড়ি দিতে এসে যাত্রী বা ছোট গাড়ির চালকরাও বিরক্ত প্রকাশ করে।

ঘাটে কর্তব্যরত বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর রাজু হাওলাদার বলেন, আগে ২৪ ঘন্টায় গড়ে শুধু দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার যানবাহন নদী পাড়ি দিত। এখন গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজারের মতো গাড়ি পার হয়। শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত প্রায় ৬ ঘন্টায় দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ৫২টি পণ্যবাহী গাড়ি, ১৫০টি ছোট গাড়ি এবং ৩২টির মতো যাত্রীবাহি পরিবহন পার হয়েছে। অথচ আগে সকালে মাত্র ১ ঘন্টায় ৭০০ থেকে ৮০০ মতো যানবাহন পাড় হতো।