০৪:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোয়ালন্দে অপহৃত ছাত্রলীগ নেতার বোন পাঁচ দিন পর উদ্ধার

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নবম শ্রেণীর পড়–য়া কিশোরী (১৫) অপহরণের পাঁচ দিন পর রোববার রাতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত তরুণ তাকে নিয়ে ঢাকার দিকে পালাচ্ছিল। এর আগে স্কুল ছাত্রী অপহরণের অভিযোগে তার মা বাদী হয়ে গত শনিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এতে গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ান পাড়া গ্রামের জলিল সরদারের ছেলে জীবন সরদারকে (২১) অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ জানায়, থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে অভিযান শুরু করে। গত রোববার (২৯ মার্চ) বিকেলে প্রথমে তাদেরকে কুষ্টিয়া থাকার অবস্থান পায়। পরবর্তীতে তারা স্থান পরিবর্তন করে দ্রুত দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করলে রোববার রাতেই ঘাট এলাকা থেকে স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অভিযুক্ত জীবন সরদার ও তার লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় তাদের কাউকে আটক করতে পারেনি।

এদিকে মামলার বিবরণে জানান, গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ানপাড়া রহমত উল্লাহ কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার আপন একমাত্র ছোট বোন। গত ২৪ মার্চ বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় একটি মুদি দোকানে শ্যাম্পু কিনতে যায়। দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় জুলহাস কাজীর ঘরের পিছনের সড়কের পথরোধ করে জীবনসহ আরো ২-৩জন একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা যোগে জোরপূর্বক তাকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দিকে চলে যায়। এরপর থেকে তার আর কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার অভিযোগ পত্রের স্বাক্ষী সিরাজুল ইসলাম মৃধা জানান, দেওয়ান পাড়া গ্রামের জুলহাস কাজীর বাড়ির পিছনের পাকা সড়ক দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাত ২-৩ জনের সহযোগিতায় স্কুল ছাত্রীকে অটোরিক্সায় করে জীবন জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে দেখি। পরক্ষণেই বিষয়টি আশার পরিবারকে জানায়।

মামলার বাদী স্কুল ছাত্রীর মা অভিযোগে বলেন, আমার মেয়ে স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায় জীবন তাকে উত্যক্ত করতো এবং কু-প্রস্তাব দিত। মেয়ে বিষয়টি বাড়িতে জানালে আমি উপরোক্ত বিবাদীকে বারণ করি। এতে সে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তাঘাটে বেশি করে উত্যক্ত করতে থাকে এবং অপহরণের সুযোগ খুঁজতে থাকে।

স্কুল ছাত্রীর বড় ভাই গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বলেন, বিষয়টি তারা জানার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে ছোট বোনের সন্ধান পাননি। কোথাও সন্ধান না পাওয়ায় আমরা থানা পুলিশের কাছে সাহায্য চাই। পুলিশ প্রথম দিকে খুব বেশি একটা গুরুত্ব দিচ্ছিল না। শনিবার এ বিষয়ে আমার মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে পুলিশের পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিতে থাকি। অবশেষে গত রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ায় অবস্থানের খবর পায়। সেখান থেকে ঢাকায় যাবার পথে পথিমধ্যে পরিবারের লোকজন পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। তবে অভিযুক্ত জীবন পালিয়ে যায়।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত তরুণের সাথে স্কুল ছাত্রীর প্রেমের সর্ম্পক ছিল। শনিবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যেহেতু স্কুল ছাত্রী অপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে উদ্ধারে পুলিশ মাঠে কাজ করতে থাকে। রোববার জীবনের মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর ঢাকায় যাবার পথে দৌলতদিয়া থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে জীবন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

গোয়ালন্দে অপহৃত ছাত্রলীগ নেতার বোন পাঁচ দিন পর উদ্ধার

পোস্ট হয়েছেঃ ০৪:৪৩:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মার্চ ২০২০

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নবম শ্রেণীর পড়–য়া কিশোরী (১৫) অপহরণের পাঁচ দিন পর রোববার রাতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্ত তরুণ তাকে নিয়ে ঢাকার দিকে পালাচ্ছিল। এর আগে স্কুল ছাত্রী অপহরণের অভিযোগে তার মা বাদী হয়ে গত শনিবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এতে গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ান পাড়া গ্রামের জলিল সরদারের ছেলে জীবন সরদারকে (২১) অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ জানায়, থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে অভিযান শুরু করে। গত রোববার (২৯ মার্চ) বিকেলে প্রথমে তাদেরকে কুষ্টিয়া থাকার অবস্থান পায়। পরবর্তীতে তারা স্থান পরিবর্তন করে দ্রুত দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করলে রোববার রাতেই ঘাট এলাকা থেকে স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। এসময় অভিযুক্ত জীবন সরদার ও তার লোকজন পালিয়ে যাওয়ায় তাদের কাউকে আটক করতে পারেনি।

এদিকে মামলার বিবরণে জানান, গোয়ালন্দ পৌরসভার দেওয়ানপাড়া রহমত উল্লাহ কলেজিয়েট স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতার আপন একমাত্র ছোট বোন। গত ২৪ মার্চ বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে স্থানীয় একটি মুদি দোকানে শ্যাম্পু কিনতে যায়। দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় জুলহাস কাজীর ঘরের পিছনের সড়কের পথরোধ করে জীবনসহ আরো ২-৩জন একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা যোগে জোরপূর্বক তাকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দিকে চলে যায়। এরপর থেকে তার আর কোন খোঁজ খবর পাওয়া যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও মামলার অভিযোগ পত্রের স্বাক্ষী সিরাজুল ইসলাম মৃধা জানান, দেওয়ান পাড়া গ্রামের জুলহাস কাজীর বাড়ির পিছনের পাকা সড়ক দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে অজ্ঞাত ২-৩ জনের সহযোগিতায় স্কুল ছাত্রীকে অটোরিক্সায় করে জীবন জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে দেখি। পরক্ষণেই বিষয়টি আশার পরিবারকে জানায়।

মামলার বাদী স্কুল ছাত্রীর মা অভিযোগে বলেন, আমার মেয়ে স্কুলে যাতায়াতের পথে প্রায় জীবন তাকে উত্যক্ত করতো এবং কু-প্রস্তাব দিত। মেয়ে বিষয়টি বাড়িতে জানালে আমি উপরোক্ত বিবাদীকে বারণ করি। এতে সে আরো বেশি ক্ষিপ্ত হয়ে রাস্তাঘাটে বেশি করে উত্যক্ত করতে থাকে এবং অপহরণের সুযোগ খুঁজতে থাকে।

স্কুল ছাত্রীর বড় ভাই গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বলেন, বিষয়টি তারা জানার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে ছোট বোনের সন্ধান পাননি। কোথাও সন্ধান না পাওয়ায় আমরা থানা পুলিশের কাছে সাহায্য চাই। পুলিশ প্রথম দিকে খুব বেশি একটা গুরুত্ব দিচ্ছিল না। শনিবার এ বিষয়ে আমার মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে পুলিশের পাশাপাশি আমরা বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিতে থাকি। অবশেষে গত রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ায় অবস্থানের খবর পায়। সেখান থেকে ঢাকায় যাবার পথে পথিমধ্যে পরিবারের লোকজন পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে আসে। তবে অভিযুক্ত জীবন পালিয়ে যায়।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, থানায় অভিযোগ পাওয়ার পর প্রাথমিকভাবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত তরুণের সাথে স্কুল ছাত্রীর প্রেমের সর্ম্পক ছিল। শনিবার অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। যেহেতু স্কুল ছাত্রী অপ্রাপ্ত হওয়ায় তাকে উদ্ধারে পুলিশ মাঠে কাজ করতে থাকে। রোববার জীবনের মুঠোফোন ট্র্যাকিং করে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর ঢাকায় যাবার পথে দৌলতদিয়া থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তবে জীবন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।