০৬:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তিন মাস ধরে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ, মানুষের চরম ভোগান্তি

ইমরান হোসেন, রাজবাড়ীঃ প্রায় তিন মাস ধরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট, সহজতম যোগাযোগ মাধ্যম রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ রুটে নাব্যতা সংকটের কারনে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় ১০টি জেলার যাত্রীদের সহজতম এ নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পদ্মার পানি কমে জৌকুড়া ফেরিঘাট বর্তমানে দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দুরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

ফেরি পারের আশায় যাত্রীরা চরাঞ্চলের দীর্ঘ পথ হেঁটে ও ঘোড়ার গাড়িতে ঘাটে এলেও ফেরি বন্ধ থাকায় ঝুকি নিয়ে লঞ্চ ও ট্রলারে নদী পার হতে বাধ্য হচ্ছেন। নদীতে ফেরি চলাচলে পর্যাপ্ত পানির ড্রাফট (পানির গভিরতা) না থাকায় ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুম ব্যতিত ফেরি চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করেন এলাকাবাসি।

পদ্মার পানি দ্রুত কমে যাওয়ার গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে ঘাট তত্বাবধানে থাকা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জের ফেরি ঘাট মেরামত ও ঘাট স্থানান্তরের কাজ করা হলেও নাব্য সংকট ও আড়াই কিলোমিটার ধুধু বালু চড়ের কারনে এখনও কোন রাস্তা তৈরী হয়নি। একারনে এ পথে যাতায়াতকারী রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, মাগুড়া-পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া সহ ১০ জেলার মানুষ এ রুট দিয়ে পার হলেও ফেরি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পরছেন।

তিন মাস ফেরি চলাচল বন্ধের কারনে প্রতিদিন নানা সমস্যা পড়ছেন এ অঞ্চলের ব্যাবসায়ীরা। প্রতিদিন রুট দিয়ে দুইটি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরির মাধ্যমে যাত্রীবাহি বাস, মাইক্রোবাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন পরিবহন পরাপার করা হয়। ফেরি বন্ধের কারনে ফিটনেস বিহীন ভাংগাচোড়া দুই-তিনটি লঞ্চ ও কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার চলাচল করছে। তবে বৈরী বাতাস ও নাব্য সংকটে মাঝে মাঝে এসব নৌযানে পার হতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন যাত্রীরা।

জৌকুড়া ফেরি গ্রীজার ও চালক মো. ইয়াছিন মোল্লা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে নদীর পানি কমে যাওয়ায় এবং নদীর বিভিন্ন অংশে নাব্যসংকটে চড় জেগে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরি ঘাটের কাজ চলমান রয়েছে। চড় জেগে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলের কোন সড়ক এখনও তৈরী করা হয়নি। আগামী বর্ষার আগে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কোম সম্ভবনা নেই। পানি বাড়লে ফেরি চলাচল শুরু হবে। তবে এ পথের যাত্রীরা ফেরি পার হতে না পেরে অনেক ভোগান্তির মধ্যে লঞ্চ ও নৌকায় নদী পার হচ্ছে।

রাজবাড়ীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে বি এম সাদ্দাম হোসেন জানান, সড়ক বিভাগ বলছে নাব্যতা সংকটে তিন মাস ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচড় দেখা দিয়েছে। ফেরি চলাচলে যে পরিমান পানি থাকার প্রয়োজন নদীতে নাব্য সংকটে সে পরিমান পানি না থাকায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ফেরি ঘাট মেরামত ও ঘাট স্থানান্তরের কাজ চলমান রয়েছে। এখনও ফেরি ঘাটে যানবাহন আসতে সড়ক নির্মান করা হয়নি। পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় নদীতে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। ঘাট স্থানান্তর এবং ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি কমবে রাজবাড়ী থেকে পাবনাসহ ১০ জেলার মানুষের। ফেরি ঘাট পরিদর্শন করে সার্বিক বিষয়ে ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ কতৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

তিন মাস ধরে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ, মানুষের চরম ভোগান্তি

পোস্ট হয়েছেঃ ১১:২৩:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২০

ইমরান হোসেন, রাজবাড়ীঃ প্রায় তিন মাস ধরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট, সহজতম যোগাযোগ মাধ্যম রাজবাড়ীর জৌকুড়া ও পাবনার নাজিরগঞ্জ রুটে নাব্যতা সংকটের কারনে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে প্রায় ১০টি জেলার যাত্রীদের সহজতম এ নৌরুট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। পদ্মার পানি কমে জৌকুড়া ফেরিঘাট বর্তমানে দুই থেকে আড়াই কিলোমিটার দুরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

ফেরি পারের আশায় যাত্রীরা চরাঞ্চলের দীর্ঘ পথ হেঁটে ও ঘোড়ার গাড়িতে ঘাটে এলেও ফেরি বন্ধ থাকায় ঝুকি নিয়ে লঞ্চ ও ট্রলারে নদী পার হতে বাধ্য হচ্ছেন। নদীতে ফেরি চলাচলে পর্যাপ্ত পানির ড্রাফট (পানির গভিরতা) না থাকায় ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুম ব্যতিত ফেরি চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করেন এলাকাবাসি।

পদ্মার পানি দ্রুত কমে যাওয়ার গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম দিকে জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে ঘাট তত্বাবধানে থাকা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। জৌকুড়া-নাজিরগঞ্জের ফেরি ঘাট মেরামত ও ঘাট স্থানান্তরের কাজ করা হলেও নাব্য সংকট ও আড়াই কিলোমিটার ধুধু বালু চড়ের কারনে এখনও কোন রাস্তা তৈরী হয়নি। একারনে এ পথে যাতায়াতকারী রাজবাড়ী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, মাগুড়া-পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া সহ ১০ জেলার মানুষ এ রুট দিয়ে পার হলেও ফেরি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পরছেন।

তিন মাস ফেরি চলাচল বন্ধের কারনে প্রতিদিন নানা সমস্যা পড়ছেন এ অঞ্চলের ব্যাবসায়ীরা। প্রতিদিন রুট দিয়ে দুইটি ইউটিলিটি (ছোট) ফেরির মাধ্যমে যাত্রীবাহি বাস, মাইক্রোবাস, ট্রাক ও ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল সহ বিভিন্ন পরিবহন পরাপার করা হয়। ফেরি বন্ধের কারনে ফিটনেস বিহীন ভাংগাচোড়া দুই-তিনটি লঞ্চ ও কয়েকটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার চলাচল করছে। তবে বৈরী বাতাস ও নাব্য সংকটে মাঝে মাঝে এসব নৌযানে পার হতে নানা সমস্যার সম্মুখীন হন যাত্রীরা।

জৌকুড়া ফেরি গ্রীজার ও চালক মো. ইয়াছিন মোল্লা জানান, প্রায় তিন মাস ধরে নদীর পানি কমে যাওয়ায় এবং নদীর বিভিন্ন অংশে নাব্যসংকটে চড় জেগে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফেরি ঘাটের কাজ চলমান রয়েছে। চড় জেগে যাওয়ায় যানবাহন চলাচলের কোন সড়ক এখনও তৈরী করা হয়নি। আগামী বর্ষার আগে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কোম সম্ভবনা নেই। পানি বাড়লে ফেরি চলাচল শুরু হবে। তবে এ পথের যাত্রীরা ফেরি পার হতে না পেরে অনেক ভোগান্তির মধ্যে লঞ্চ ও নৌকায় নদী পার হচ্ছে।

রাজবাড়ীর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কে বি এম সাদ্দাম হোসেন জানান, সড়ক বিভাগ বলছে নাব্যতা সংকটে তিন মাস ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। নদীর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচড় দেখা দিয়েছে। ফেরি চলাচলে যে পরিমান পানি থাকার প্রয়োজন নদীতে নাব্য সংকটে সে পরিমান পানি না থাকায় ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ফেরি ঘাট মেরামত ও ঘাট স্থানান্তরের কাজ চলমান রয়েছে। এখনও ফেরি ঘাটে যানবাহন আসতে সড়ক নির্মান করা হয়নি। পদ্মার পানি কমে যাওয়ায় নদীতে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। ঘাট স্থানান্তর এবং ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হলে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি কমবে রাজবাড়ী থেকে পাবনাসহ ১০ জেলার মানুষের। ফেরি ঘাট পরিদর্শন করে সার্বিক বিষয়ে ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ কতৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।