০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরে দুই হাজার খেজুর গাছের বীজ রোপন করলেন স্কুল শিক্ষক নুরুল ইসলাম

জাকিব আহমেদ জ্যাক, ফরিদপুরঃ খেজুরের জন্য এক সময়কার বিখ্যাত জেলা ফরিদপুর থেকে যখন দেশী খেজুরগাছ প্রায় বিলুপ্তি হতে চলেছে ঠিক সেই সময় ফরিদপুরে দুই হাজার দেশী খেজুরের বীজ রোপন করলেন ফরিদপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রসায়ন শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম।

প্রতি মাসে একটি ভালো কাজ করার সেই নুরুল স্যার রোববার ও আগের দিন শনিবার দুইদিনে ফরিদপুর শহরের রোড় ডিভাইডারে এসব দেশী খেজুরের বীজ রোপন করেন। তিনি শহরের টেপাখোলা রেল ক্রসিং এর পশ্চিম পাড় মুজব সড়ক থেকে শুরু করে পুলিশ লাইন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পৌর ভবন, জনতা ব্যাংকের মোড়, আলীপুর, পুরাতন বাসষ্টান্ড হয়ে পশ্চিম খাবাস পুরের প্রধান সড়কের রোড ডিভাডার গুলোর মাঝ খানে খেজুরের বীজ রোপন করেন।

মো. নুরুল ইসলাম জানান, খেজুর গুড়ের জন্য প্রসিদ্ধ আমাদের ফরিদপুর জেলা থেকে কালক্রমে খেজুরগাছ হারিয়ে যাচ্ছে। প্রধানত তিনটি কারনে আমার এই খেজুরের বীজ রোপন করা। এক. ফরিদপুরের ঐতিহ্যকে ধরে রাখা। দুই. শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা তিন. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। তিনি বলেন, শুরু করেছি রোড ডিভাইডারের মধ্যে বীজ রোপনের মাধ্যমে বীজ থেকে চারা গজালে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। আগামি কিছুদিনের মধ্যে সড়কের পাশেও দেশী খেজুরের বীজ রোপন করা হবে।

ফরিদপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রসায়ন শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম যিনি প্রতি মাসে একটি ভালো কাজ করে থাকেন। যার সুনাম ফরিদপুর শহরের মানুষের মুখে মুখে। এইসব ভালো কাজের অংশ হিসেবে তিনি ফরিদপুরের পদ্মাপাড়ে “দয়া করে নদীতে কেউ প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলবেন না, নদী না বাচঁলে আমরা বাচবো নাঁ, নদী বাঁচলে আমরা বাঁচবো” এই শ্লোগান সম্বলিত দুটি স্থায়ী বিলবোর্ড স্থাপন করেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ও নদীর দূষণ রক্ষার্থে তিনি ফরিদপুরের ধলার মোড় পদ্মানদীর পাড়ে ১টি ও ভাজন ডাঙ্গা ভুঁইয়া বাড়ীর ঘাট পদ্মানদীর পাড়ে ১টি বিলবোর্ড স্থাপন করেছেন। দেশে করোনার প্রভাবে যখন মানুষ কর্মহীন হয়ে পরে তখন তিনি ফরিদপুর শহরের দরিদ্র দিনমুজুর, রিক্সা চালক, চা বিক্রেতা, নরসুন্দর ও খেটে খাওয়া প্রতিবেশীদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেন।

শিক্ষক নুরুল ইসলাম রিক্সা চালকদের মধ্যে সকালের নান্তা বিতরণ করেছেন। রিক্সা চালক ও ভিক্ষুক মিলে অর্ধশত ব্যক্তিকে দুপুরে চাইনিজ খাইয়েছেন। দুঃস্থ্যদের মাঝে সেমাই, চিনি ও গুড়া দুধ বিতরণ করেছেন। মাদ্রাসায় ছাত্রদের সহযোগিতা করা, এক বৃদ্ধার ঈদের যাবতীয় খরচ বহন করেন। শহরে রোপন করেছেন ২০টি কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়ার চারা গাছ। শহরের বিভিন্ন জায়গায় রোপন করেছেন এক হাজার ১০০ তালের বীজ। এ বছর মুজিববর্ষ উপলক্ষে সকল ভালো কাজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছি।

শিক্ষক নুরুল ইসলাম ফরিদপুর শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি বিবাহিত, এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। নুরুল ইসলাম জানান, অনেক দিনের স্বপ্ন সমাজের জন্য কিছু করা। তাই প্রতিমাসে অন্তত একটি করে ভালো কাজ করার চেষ্টা করছি।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

ফরিদপুরে দুই হাজার খেজুর গাছের বীজ রোপন করলেন স্কুল শিক্ষক নুরুল ইসলাম

পোস্ট হয়েছেঃ ০৭:১৪:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ জুন ২০২০

জাকিব আহমেদ জ্যাক, ফরিদপুরঃ খেজুরের জন্য এক সময়কার বিখ্যাত জেলা ফরিদপুর থেকে যখন দেশী খেজুরগাছ প্রায় বিলুপ্তি হতে চলেছে ঠিক সেই সময় ফরিদপুরে দুই হাজার দেশী খেজুরের বীজ রোপন করলেন ফরিদপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রসায়ন শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম।

প্রতি মাসে একটি ভালো কাজ করার সেই নুরুল স্যার রোববার ও আগের দিন শনিবার দুইদিনে ফরিদপুর শহরের রোড় ডিভাইডারে এসব দেশী খেজুরের বীজ রোপন করেন। তিনি শহরের টেপাখোলা রেল ক্রসিং এর পশ্চিম পাড় মুজব সড়ক থেকে শুরু করে পুলিশ লাইন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পৌর ভবন, জনতা ব্যাংকের মোড়, আলীপুর, পুরাতন বাসষ্টান্ড হয়ে পশ্চিম খাবাস পুরের প্রধান সড়কের রোড ডিভাডার গুলোর মাঝ খানে খেজুরের বীজ রোপন করেন।

মো. নুরুল ইসলাম জানান, খেজুর গুড়ের জন্য প্রসিদ্ধ আমাদের ফরিদপুর জেলা থেকে কালক্রমে খেজুরগাছ হারিয়ে যাচ্ছে। প্রধানত তিনটি কারনে আমার এই খেজুরের বীজ রোপন করা। এক. ফরিদপুরের ঐতিহ্যকে ধরে রাখা। দুই. শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা তিন. পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা। তিনি বলেন, শুরু করেছি রোড ডিভাইডারের মধ্যে বীজ রোপনের মাধ্যমে বীজ থেকে চারা গজালে শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। আগামি কিছুদিনের মধ্যে সড়কের পাশেও দেশী খেজুরের বীজ রোপন করা হবে।

ফরিদপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের রসায়ন শিক্ষক মো. নুরুল ইসলাম যিনি প্রতি মাসে একটি ভালো কাজ করে থাকেন। যার সুনাম ফরিদপুর শহরের মানুষের মুখে মুখে। এইসব ভালো কাজের অংশ হিসেবে তিনি ফরিদপুরের পদ্মাপাড়ে “দয়া করে নদীতে কেউ প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলবেন না, নদী না বাচঁলে আমরা বাচবো নাঁ, নদী বাঁচলে আমরা বাঁচবো” এই শ্লোগান সম্বলিত দুটি স্থায়ী বিলবোর্ড স্থাপন করেন। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ও নদীর দূষণ রক্ষার্থে তিনি ফরিদপুরের ধলার মোড় পদ্মানদীর পাড়ে ১টি ও ভাজন ডাঙ্গা ভুঁইয়া বাড়ীর ঘাট পদ্মানদীর পাড়ে ১টি বিলবোর্ড স্থাপন করেছেন। দেশে করোনার প্রভাবে যখন মানুষ কর্মহীন হয়ে পরে তখন তিনি ফরিদপুর শহরের দরিদ্র দিনমুজুর, রিক্সা চালক, চা বিক্রেতা, নরসুন্দর ও খেটে খাওয়া প্রতিবেশীদের বাড়ীতে বাড়ীতে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেন।

শিক্ষক নুরুল ইসলাম রিক্সা চালকদের মধ্যে সকালের নান্তা বিতরণ করেছেন। রিক্সা চালক ও ভিক্ষুক মিলে অর্ধশত ব্যক্তিকে দুপুরে চাইনিজ খাইয়েছেন। দুঃস্থ্যদের মাঝে সেমাই, চিনি ও গুড়া দুধ বিতরণ করেছেন। মাদ্রাসায় ছাত্রদের সহযোগিতা করা, এক বৃদ্ধার ঈদের যাবতীয় খরচ বহন করেন। শহরে রোপন করেছেন ২০টি কৃষ্ণচূড়া ও রাধাচূড়ার চারা গাছ। শহরের বিভিন্ন জায়গায় রোপন করেছেন এক হাজার ১০০ তালের বীজ। এ বছর মুজিববর্ষ উপলক্ষে সকল ভালো কাজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছি।

শিক্ষক নুরুল ইসলাম ফরিদপুর শহরের কমলাপুর লালের মোড় এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি বিবাহিত, এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। নুরুল ইসলাম জানান, অনেক দিনের স্বপ্ন সমাজের জন্য কিছু করা। তাই প্রতিমাসে অন্তত একটি করে ভালো কাজ করার চেষ্টা করছি।