০৫:১৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদকের কার্যালয় ভাঙচুর, আ.লীগের হস্তক্ষেপে সকল কর্মকান্ড স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ঈদের আগের দিন রাতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় এর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা ও প্রধান মন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগে ঈদের পরদিন পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৭জনকে চিহিৃত এবং অজ্ঞাত ১৩জনকে আসামী করে মামলা করেছে।

এর প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রলীগ দলীয় কার্যালয়ে বুধবার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে। পৌর ছাত্রলীগ পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বুধবার সকাল ১০টায় গোয়ালন্দ বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি আহ্বান করে। এতে উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সমস্যা সমাধানে উপজেলা আ.লীগ মঙ্গলবার রাতে নেতাকর্মীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক বসে উভয় পক্ষের কর্মসূচি স্থগিত করে। সেই সাথে সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের সকল কর্মকান্ড স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন বলেন, ঈদের আগের দিন গোয়ালন্দ বাজারে নিজস্ব হৃদয় সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলা ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসে দলীয় কর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন। রাত ৯টার দিকে পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি রাতুল আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপি পন্থী ২০-২৫জন নেতাকর্মী কার্যালয়ে প্রবেশ করে পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডলের বাসার সামনে পুরাতন ফেস্টুন সরানোর কারন জানতে চান। এক ঘন্টার মধ্যে পুনরায় ওই স্থানে ফেস্টুন বসানোর কথা বললে উত্তেজিত সুরে কথা বলে রুম থেকে বের হওয়ার সময় দরজায় ধাক্কা মারে। কেন ধাক্কা মারলে জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে টেবিলের গ্লাস, চেয়ার ভাঙচুর করেন। টেবিলে থাকা কলমদানি ছুড়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। সুমন নামের এক কর্মী বাধা দিলে তাকে মারধর করে ও টেবিলের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। রাতুলের বাবা কুব্বাত মন্ডল পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা। বিএনপির নেতার ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়ে বিভিন্ন অন্যায় কাজ করছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ বলেন, মেয়রের বাসার সামনে টানানো ফেস্টুন আমাকে না জানিয়ে সরিয়ে আবির হোসেনের ফেস্টুন স্থাপন করে। কেন সরানো হয়েছে তা জানতে তার কার্যালয়ে যাই। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে পুনরায় স্থাপনের কথা বললে আমরা ফিরে আসি। এরপরই শুনতে পাই ভাঙচুর করা হয়েছে এবং সেটা আমাদেরকে দায়ী করা হয়েছে। যদি কোন বিষয় আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান হয় সেখানে ভাঙচুর কেন হবে? প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও টেবিল ভাঙচুরের কথা বলা হয়েছে যা আমরা জানিইনা।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় ঈদের পরদিন রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় বাদী হয়ে পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি রাতুল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আকাশ সাহা, সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মৃদুলসহ ৭জনকে চিহিৃত এবং অজ্ঞাত ১৩জন আসামী করে মামলা করেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ বলেন, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়ে যে ঘটনাটি ঘটে দুঃখজনক। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে মঙ্গলবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে আ.লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে উভয় পক্ষের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি মামুন-অর রশিদকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন। এতে যে দোষি সাব্যস্ত হবেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের সকল ধরনের কর্মকান্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

বালিয়াকান্দিতে আনারস প্রতীকের দুই সমর্থকে হাতুড়ী পিটিয়ে জখমের অভিযোগ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে

উপজেলা ছাত্রলীগ সম্পাদকের কার্যালয় ভাঙচুর, আ.লীগের হস্তক্ষেপে সকল কর্মকান্ড স্থগিত

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:১৪:৪৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে ঈদের আগের দিন রাতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় এর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলা ও প্রধান মন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের অভিযোগে ঈদের পরদিন পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৭জনকে চিহিৃত এবং অজ্ঞাত ১৩জনকে আসামী করে মামলা করেছে।

এর প্রতিবাদে উপজেলা ছাত্রলীগ দলীয় কার্যালয়ে বুধবার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টায় সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে। পৌর ছাত্রলীগ পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে বুধবার সকাল ১০টায় গোয়ালন্দ বাসষ্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি আহ্বান করে। এতে উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সমস্যা সমাধানে উপজেলা আ.লীগ মঙ্গলবার রাতে নেতাকর্মীদের নিয়ে জরুরি বৈঠক বসে উভয় পক্ষের কর্মসূচি স্থগিত করে। সেই সাথে সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের সকল কর্মকান্ড স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন বলেন, ঈদের আগের দিন গোয়ালন্দ বাজারে নিজস্ব হৃদয় সুপার মার্কেটের দ্বিতীয় তলা ব্যক্তিগত কার্যালয়ে বসে দলীয় কর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করছিলেন। রাত ৯টার দিকে পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি রাতুল আহমেদের নেতৃত্বে বিএনপি পন্থী ২০-২৫জন নেতাকর্মী কার্যালয়ে প্রবেশ করে পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম মন্ডলের বাসার সামনে পুরাতন ফেস্টুন সরানোর কারন জানতে চান। এক ঘন্টার মধ্যে পুনরায় ওই স্থানে ফেস্টুন বসানোর কথা বললে উত্তেজিত সুরে কথা বলে রুম থেকে বের হওয়ার সময় দরজায় ধাক্কা মারে। কেন ধাক্কা মারলে জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে টেবিলের গ্লাস, চেয়ার ভাঙচুর করেন। টেবিলে থাকা কলমদানি ছুড়ে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করে। সুমন নামের এক কর্মী বাধা দিলে তাকে মারধর করে ও টেবিলের ড্রয়ারে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। রাতুলের বাবা কুব্বাত মন্ডল পৌরসভার ২নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা। বিএনপির নেতার ছেলে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়ে বিভিন্ন অন্যায় কাজ করছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি রাতুল আহমেদ বলেন, মেয়রের বাসার সামনে টানানো ফেস্টুন আমাকে না জানিয়ে সরিয়ে আবির হোসেনের ফেস্টুন স্থাপন করে। কেন সরানো হয়েছে তা জানতে তার কার্যালয়ে যাই। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে পুনরায় স্থাপনের কথা বললে আমরা ফিরে আসি। এরপরই শুনতে পাই ভাঙচুর করা হয়েছে এবং সেটা আমাদেরকে দায়ী করা হয়েছে। যদি কোন বিষয় আলোচনা সাপেক্ষে সমাধান হয় সেখানে ভাঙচুর কেন হবে? প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও টেবিল ভাঙচুরের কথা বলা হয়েছে যা আমরা জানিইনা।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় ঈদের পরদিন রাতে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন রিদয় বাদী হয়ে পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি রাতুল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আকাশ সাহা, সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মৃদুলসহ ৭জনকে চিহিৃত এবং অজ্ঞাত ১৩জন আসামী করে মামলা করেছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ বলেন, ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদকের কার্যালয়ে যে ঘটনাটি ঘটে দুঃখজনক। অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে মঙ্গলবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে আ.লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে উভয় পক্ষের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়। উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি মামুন-অর রশিদকে আহ্বায়ক করে ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটি তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করবেন। এতে যে দোষি সাব্যস্ত হবেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রলীগের সকল ধরনের কর্মকান্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।