নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজবাড়ীঃ শেখ হাসিনার পরিবারের কেউ মুক্তিযুদ্ধের রনাঙ্গনে যুদ্ধ করেনি। যদি কেউ প্রমান করে দিতে পারেন তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দিব। অথচ তারা বলে বেড়ান তারাই সব করেছেন, আর কেউ কিছু করেননি।শনিবার বিকেলে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউট স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে আয়োজিত কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুল বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, আ.লীগ ভেবেছিল জিয়াউর রহমানকে হত্যা করলেই বিএনপি শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু বিএনপি কি শেষ হয়ে গেছে। বেগম জিয়া ৯ বছর গৃহবন্দী ছিলেন কিন্তু এক দিনের জন্য হলেও আপোষ করেননি। ৮৬ সালের নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনা ঘোষণা করলো এরশাদের অধিনে যারা নির্বাচনে যোগদান করবে তারা জাতীয় বেঈমান হবে। অথচ ২৪ ঘন্টার মধ্যে কথা ভঙ্গ করে এরশাদের সাথে লং ড্রাইভে গিয়ে এরশাদের নির্বাচনে অংশ নিল। সেই নির্বাচনে জামায়াতও অংশ নিয়েছিল। যে কারনে এরশাদ আরো চার বছর ক্ষমতায় বেশি ছিল। ৯০ এ তার পতন হলো।
এই আওয়ামী লীগ হলো সেই আওয়ামী লীগ যারা কথা দিয়ে কথা রাখে নাই, জাতির সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করে। আর বেগম খালেদা জিয়াকে ওয়ান ইলেভেনের শাসনের সময় বলা হলো, আপনি বিদেশে চলে যান৷ বাংলাদেশের রাজনীতি আপনার প্রয়োজন নাই। সৌদি আরবে আপনার জন্য রাজ প্রাসাদ প্রস্তুত রয়েছে। সেখানে সন্তানদের নিয়ে আরাম আয়াশে থাকেন। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়া যাননি, কোন আপোষ করেননি। খালেদা জিয়া বললেন, দেশের বাইরে আমার কোন ঠিকানা নাই। এই দেশে আমার জন্ম, এই দেশে আমার স্বামীর কবর। পূর্ব পুরুষদের কবর এখানে। আমার স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছেন। এই বাংলাদেশ ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না।
আরেক নেত্রী তো পলায়ন করেছেন। আওয়ামী লীগ বলে, তাদের না কি পালানোর অভ্যাস নাই। ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ ফেরাউনের হাত থেকে দেশটা রক্ষা পেয়েছে। হাজার হাজার, লাখো নেতাকর্মী ফেলে নিজের বোন আর কিছু চ্যালাব্যালা সাথে সুটকেস ভর্তি টাকা আর ডলার নিয়ে ভারতে পালায় গেল। অথচ তিন দিন আগেও বলেছিল শেখ হাসিনা পালায় না।
বর্তমান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগষ্টের আগে ভোটের অধিকার ফিরে পেতে ১৫ বছর রাজপথে থেকেছি, আন্দোলন করেছি। এখন আর দেরি না করে ভোটের ব্যবস্থা করেন। আমাদের রাজপথে নামাতে বাধ্য কইরেন না। আমরা রাতের অন্ধকারে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় যেতে চাইনা। জনগন যদি চাই তাহলে তাদের ভোটে ক্ষমতায় যেতে চাই।
বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষক জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে ৩ মাস ব্যাপী ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষক সমাবেশের অংশ হিসেবে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুরে এ কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জাতীয়তাবাদী কৃষকদল খানখানাপুর ইউনিয়ন শাখা সমাবেশের আয়োজন করে।
রাজবাড়ী জেলা কৃষকদলের আহবায়ক মো. আইউবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কৃষক সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি কর্ণেল (অবঃ) এস.এম ফয়সাল ও সহসভাপতি এ্যাডভোকেট মো. আসলাম মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান সেলিম, সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কৃষিবিদ রাজিবুল হাসান, সহ-সম্পাদক মোঃ আবুল হাসান মিয়া, রাজবাড়ী জেলা কমিটির সদস্য সচিব এ.কে.এম সিরাজুল আলম চৌধুরী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট লিয়াকত আলী প্রমূখ।