নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মালয়েশিয়া প্রবাসী আল আমিন হত্যায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। রোববার (৪ মে) বিকেলে পাবনার আমিনপুর থানার গোবিন্দপুর থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত রুবেল মন্ডল (২০) পাবনার আমিনপুর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের একরাম মন্ডলের ছেলে ও একই গ্রামের টিক্কা সরদারের ছেলে শাকিল সরদার (২৪)।
সোমবার (৫ মে) বিকেলে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে গোয়ালন্দের আলোচিত মালয়েশিয়া প্রবাসী আল আমিন, চরমপন্থী নেতা সুশীল কুমার সরকার ও সর্বহারা নেতা শহীদ মোল্লা হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা হয়। প্রবাসী আল আমিন হত্যায় তদন্তে প্রাপ্ত আসামি রুবেল মন্ডল এবং শাকিল সরদারের গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়।
এর আগে ১ মে পাবনার ইশ্বরদী দাশুড়িয়া থেকে র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের সহযোগিতায় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ পাবনার আমিনপুর থানার কোমরপুর পশ্চিমপাড়ার আব্দুস সালাম ঠান্ডু (৩৫) এবং একই থানার চকআব্দুস শুকুর গ্রামের জুয়েল রানাকে (৪২) গ্রেপ্তার করে। ২৬ এপ্রিল রাতে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট থেকে এজাহারভুক্ত আসামি মেগা সরদারকে (৪৭) গ্রেপ্তার করে। পুলিশ এই মামলায় মোট পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পাবনার আমিনপুর থানার সিদ্দিকনগর রামনারায়ণপুর গ্রামের বক্কার ম-লের ছেলে আল আমিন মন্ডল সাত বছর পর চার মাস আগে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। ২৫ এপ্রিল দুপুরে মামা লিটন কাজী, বোন আকালিমার সঙ্গে ঢালারচর খৈয়মের বাড়ি পাত্রী দেখতে যান। খাওয়া শেষে মেগা সরদারের মোটরসাইকেলে পাশের গোয়ালন্দের রাখালগাছি বাজারে যান। আল আমিনের বাড়ি থেকে রাখালগাছির দূরত্ব প্রায় আট কিলোমিটার। কিছুক্ষণ পর আমিনপুর থানার কোমরপুর গ্রামের শাহ আলী, রবিউল ইসলামসহ সাত থেকে আটজন চারটি মোটরসাইকেলে পৌছে চাঁদাদাবি করে। এ নিয়ে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে কিল-ঘুষি এবং ঘার মটকিয়ে ছুরিকাঘাত করলে প্রাণ বাঁচাতে আল আমিন যমুনা নদীতে ঝাপ দেন। ২৬ এপ্রিল বেলা ১১টার আগ পর্যন্ত তাঁর সন্ধান পায়নি। ওইদিন দুপুরে রাখালগাছি খেয়া ঘাটের কাছে বরশিতে আটকে লাশ টেনে তোলা হয়। পুলিশ দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। লাশের বাঁ পাশে চোখের নিচে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ আছে।
পরিবারের ভাষ্যমতে, ঘটনার ১৫-১৬দিন আগে শাহ আলী চা-নাশতা খাওয়ার কথা বলে আল আমিনের কাছে চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় মুঠোফোনে তাঁকে গালিগালাজ করেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এমনকি ঘটনার দিন দেখা হওয়ার পর ফের চাঁদাদাবি করে মারধর করে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম জানান, ২৬ এপ্রিল রাতে আল আমিনের মামা লিটন কাজী বাদী হয়ে চারজনকে চিহিৃত এবং অজ্ঞাত ৭-৮জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন। রোববার বিকেলে পাবনার গোবিন্দপুর এলাকা থেকে পুলিশ আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদেরকে আজ সোমবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।