নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজবাড়ীঃ আবারও ঘন কুয়াশার কারনে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া এবং মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে ফেরি চলাচল বিঘ্নত হয়। কয়েক ঘন্টা বন্ধের পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ফেরিসহ নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হয়। নদী পাড়ি দিতে না পারায় উভয় ঘাটে আটকে থাকায় দুর্ভোগের শিকার হন অনেকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশ (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে পরদিন বুধবার সকাল পর্যন্ত আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে প্রায় ৮ ঘন্টা এবং দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথেও ৬ ঘন্টা বন্ধের পর ফেরি চালু হয়। দিন শেষে রাতেও ফেরি চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বুধবার দিবাগত মধ্যরাত থেকে পদ্মা নদী অববাহিকায় ফের ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে অতিমাত্রায় কুয়াশা পড়তে থাকলে ফেরি চালানো ঝুকিপূর্ণ হয়ে উঠে।
সংস্থাটি জানায়, রাত দেড়টার দিকে অতিমাত্রায় কুয়াশা পড়ার কারনে দুর্ঘটনার ঝুকি এড়াতে ১টা ৪০মিনিট থেকে মানিকগঞ্জের আরিচা ও পাবনার কাজিরহাট নৌপথে ফেরিসহ সকল নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় আরিচা ঘাট এলাকায় ফেরি বীরশ্রেষ্টঠ হামীদুর রহমান, শাহ আলী, চিত্রা, খান জাহান আলী, কিষাণী যানবাহন লোড নিয়ে কুয়াশা কমার অপেক্ষা করতে থাকে। একইভাবে কাজিরহাট ঘাটে ধানসিঁড়ি নামক আরেকটি ফেরি যানবাহন লোড নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার পর থেকে এই রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
অপরদিকে দেশের আরেক গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ঘন কুয়াশার মধ্যে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া শাহ পরান ও হাসনা হেনা নামক দুটি ফেরি মাঝ নদীতে গিয়ে দিক হারিয়ে ফেলে। উপায় না পেয়ে ফেরি মাষ্টারগন (চালক) মাঝ নদীতে নোঙর করতে বাধ্য হয়। এ খবর জানানোর পর উভয় ঘাট থেকে ফেরি ছাড়া বন্ধ করে দেয়।
এসময় দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন, বাইগার ও বীরশ্রেষ্ঠ ভাষা শহীদ বরকত নামক তিনটি ফেরি যানবাহন লোড নিয়ে নোঙর করে থাকে। একইভাবে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, ঢাকা, কেরামত আলী, কপোতি ও বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর নামক পাঁচটি ফেরি নোঙর করে থাকে। প্রায় চার ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার পর থেকে দৌলতিদয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে ফেরি বন্ধ থাকায় উভয় ঘাটে নদী পাড়ি দিতে আসা বেশকিছু যানবাহন ঘাটে আটকে থাকে। এসময় যাত্রীসহ চালকেরা বাড়তি ভোগান্তিতে পড়েন।
ঢাকাগামী দূরপাল্লার পরিবহনের দৌলতদিয়া ঘাট তত্ত্বাবধায়ক বারেক শেখ বলেন, কুয়াশার কারনে টানা দুইদিন ধরে এই রুটে ফেরিসহ নৌযান চলাচল বিঘিœত হচ্ছে। আজ সকালে যে সমস্ত দূরপাল্লার যানবাহন সকাল ৯টার আগেই ঢাকা পৌছতো সেসব গাড়ি সবেমাত্র নদী পাড়ি দিচ্ছে। কুয়াশার কারনে অধিকাংশ কর্মজীবী মানুষ বাড়তি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আব্দুস সালাম বলেন, বুধবার কয়েক ঘন্টা বন্ধের পর আবার দিন শেষে মধ্যরাত থেকে গুরুত্বপূর্ণ এই দুই নৌপথে ফেরিসহ নৌযান চলাচল বিঘিœত হয়। ঘন কুয়াশার কারনে আবারও কয়েক ঘন্টা বন্ধের পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এতে ঘাটে আটকে থাকা গাড়ি চালক ও যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হন।