ঢাকা,
শনিবার , ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় যৌনপল্লির কয়েকশ যৌনকর্মী ইমরান হোসাইন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণা, হয়রানীর প্রতিবাদ ও বিচারের দাবীতে রাস্তায় নেমেছে। সোমবার দুপুরে দৌলতদিয়া যৌনপল্লি সংলগ্ন রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকায় তারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। ইমরানের বিরুদ্ধে প্রতারনা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, জোরপূর্বক বাড়ি দখলের চেষ্টাসহ মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দেন তারা।
কর্মসূচি পালনকালে খুশি আক্তার নামের যৌনকর্মী বলেন, আমার মা শেফালী বেগম পল্লির বাড়িওয়ালী। ইমরান হোসাইন (৪৫) নামের এক যুবক নিয়মিত যৌনপল্লিতে আসতো। নিজেকে একজন শিপিং ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে আমাদের বাড়ির ভাড়াটিয়া বৈশাখীর কাছে নিয়মিত আসা যাওয়া করতো। সঙ্গে মোহাম্মদ আলী, শফিকুল ইসলামসহ কয়েকজনকে আনতেন। বৈশাখীর ঘরে মদের আসর বসিয়ে উম্মাদ নাচ-গান করতো। এক পর্যায়ে হয়রানীরমূলক মামলায় ফেলে বৈশাখীকে বিয়ে করে। এরপর আমাদের বাড়ি দখলের পায়তারা করতে থাকে। জোরপূর্বক বাড়ি ভাড়া নিয়ে মাদক ব্যবসার চেষ্টা চালান। বাধা দিলে আমাদের মারধর করে।
বাড়িওয়ালী শেফালী আক্তার বলেন, ইমরান মাঝেমধ্যে যৌনপল্লিতে এসে মাতলামী করে আমাদের নির্যাতন করতো। কথা না শুনলে অস্ত্রের ভয় দেখায়। যৌনকর্মীদের নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি বলে সে হুমকি দিচ্ছে। সে হুমকি দেয়, ওসিকে বদলি করে দিয়ে হলে তোদের শায়েস্তা করা হবে। এখন আপনারা আমাদের বাচান।
গোয়ালন্দঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, ইমারনের বাড়ি যশোর বললেও ঠিকানা ভুল। সে একেক সময় একেক ঠিকানা ও ফোন ব্যবহার করে। তার বিরুদ্ধে পিরোজপুর, যশোর, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কার্গো ভাড়া করে বিক্রি করে দেয়া, চেক জালিয়াতি, ভুয়া দলিল করে বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগে অন্তত ৮টি মামলা রয়েছে।
জাল দলিল করে বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগে ২০২৩ সালের ১৮ জুন দৌলতদিয়া যৌনপল্লির শেফালী বেগম রাজবাড়ী আদালতে মামলা করেন। প্রাণনামের হুমকির অভিযোগে যৌনকর্মী সেলিনা গোয়ালন্দঘাট থানায় ২৫ আগষ্ট সাধারণ ডায়রী করেন। প্রাণনাশের ভয়ভীতী দেখানোর অভিযোগে শেফালী আক্তার নামের একজন ৬ জুলাই গোয়ালন্দঘাট থানায় জিডি করেন।
গত ২৪মে রাতে যৌনপল্লির শেফালী বেগমের বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগ পেয়ে ইমরানের সহযোগী মোহাম্মদ আলীকে পুলিশ আটক করে। পরদিন থেকে ইমরান মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পুলিশকে নানাভাবে হয়রানী করছে। ইমরানের বিরুদ্ধে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি প্রতারণা মামলা এবং তিনটি সাধারন ডায়রী (জিডি) হয়েছে।
এছাড়া ইমরান বিভিন্ন সময় উর্দ্বোতন কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে যৌনকর্মীদের হয়রানী করাসহ মিথ্যা মামলা দিয়েও হয়রানী করে আসছিল। যৌনকর্মীদের নামে এমন একাধিক মামলা করলে পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে তার কোনটার সত্যতা পাননি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে ইমরান হোসাইনের মুঠোফোনে কয়েকবার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তিনি আত্মগোপনে আছেন।
