জীবন চক্রবর্তী ও মইনুল হক, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ীঃ ১৯৯৮ সালের ৪ নভেম্বর প্রতিষ্ঠার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে এখনো ভালো কাজ করে, ভালোকে ধারণ করেই এগিয়ে যাচ্ছে। ভালোকে ধারণ করেই এগিয়ে চলেছে প্রথম আলো। সব সময় সত্যের জায়গায় অবিচল থাকে। আর প্রথম আলোর প্রধান শক্তি হচ্ছে পাঠক। পাঠকের আস্থার প্রতিক হয়ে সারা দেশে ভালোকে ভালো আর মন্দকে মন্দ হিসেবেই পাঠকের সামনে তুলে ধরছে।
প্রথম আলোর ২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত সুধীজন তাঁদের বক্তব্যে এ কথা তুলে ধরেন। গোয়ালন্দ বন্ধুসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রথম আলো প্রতিনিধি এম রাশেদুল হক। পরে জুলাই-আগষ্টে ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
বন্ধুসভার সভাপতি জীবন চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে বুধবার বিকেলে গোয়ালন্দ বাজার আলাউদ্দিন ম্যানসনের তৃতীয় তলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাবেয়া ইদ্রিস মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের শেখ, সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মুহিত, গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নির্মল কুমার চক্রবর্তী, বাংলাদেশ মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি গোয়ালন্দ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, চৌধুরী আব্দুল হামিদ একাডেমীর প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ আবুল হোসেন প্রমূখ।
এছাড়া বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি গোয়ালন্দ উপজেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মদ বাবর আলী, সাধারণ সম্পাদক নাসরীন আক্তার ইতি, শিক্ষক সমাজের প্রতিনিধি গিয়াস উদ্দিন তালুকদার, রাজবাড়ী জেলা রিপোর্টাস ইউনিটের সভাপতি হেলাল মাহমুদ, গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শামীম শেখ, বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান, সহসভাপতি মইনুল হক মৃধা, রফিকুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান, ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ, সমাজ সেবক ডা. সুধির কুমার বিশ্বাস, মালওয়েশিয়া প্রবাসী অসীম কুমার রায়, ইকরামুল হক সজিব, জাকির হোসেন সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক মন্ডলী, ব্যবসায়ী ও বন্ধুসভার সকল সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের শেখ বলেন, প্রথম আলো একটি আধুনিক, প্রগতিশীল রুচিসম্মত, বৈচিত্রময় পত্রিকা হিসেবে প্রিন্ট এবং অনলাইনে মিডিয়া জগতে শীর্ষে রয়েছে। এমনকি পারিবারিক পছন্দের পত্রিকায় রুপান্তির হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকের বাইরে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস কেমন হবে এ ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখছে। বিষয় ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের নিয়মিত লেখনির কারনে আমরা সঠিক তথ্য পাচ্ছি। পাঠচক্রের মাধ্যমে পড়াশুনায় উদ্বুদ্ধ করছে, পাঠক সমৃদ্ধি বেড়েছে। পাশাপাশি বন্ধুসভার সামাজিক কর্মকান্ডের সফলতা কামনা করেন।
অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মুহিত বলেন, প্রথম আলো বহুমাত্রিক গুনে গুনান্বিত। সমাজের সত্য, সঠিক খবর তুলে ধরে। এ কারনে যখন যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসে তাদের রসানলে পড়তে হয়। ইদানিং প্রথম আলো ও ডেইলি ষ্টার বন্ধে সামাজিক মাধ্যমে তৎপর রয়েছে একটি চক্র। আমি মনে করি প্রথম আলো ও ডেইলি ষ্টার নিরভেজাল সত্য সংবাদ পরিবেশনে এখনো অবিচল রয়েছে।
প্রথম আলো সামাজিক কাজেও এগিয়ে যা অন্য কোন সংবাদমাধ্যম করেনা। বন্ধুসভার সদস্যরা দেশের দুর্যোগকালীন সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে ঝাপিয়ে পড়ে। মেধাবীদের বৃত্তি প্রদান, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী প্রদান, শীতকালে শীতবস্ত্র প্রদান, বৃক্ষ রোপন, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, মেধাবীদের বৃত্তি প্রদান, লাইব্রেরীতে বই উপহার প্রদানের মতো ভালো কাজেও এগিয়ে।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নির্মল কুমার চক্রবর্তী বলেন, শত বাধা প্রতিবন্ধকতা অনেক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে প্রথম আলো এখনো সত্যের পথে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক পত্রিকায় লেখালেখিতে, বানানে, বাক্যে ত্রুটি থাকে। অথচ প্রথম আলো সব সময় নির্ভুল এবং সঠিক তথ্য তুলে ধরে। সত্যের জায়গায় অবিচল থাকে প্রথম আলো। প্রথম আলোর একজন নিয়মিত পাঠক অনেক বিদ্ধানও হতে পারে।
আলোচনা সভা শেষে সমাজে স্বেচ্ছাসেবকমূলক কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বন্ধুসভার চার সদস্যকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এরা হচ্ছেন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট, বন্ধুসভার সদস্য আমীরুল ইসলাম রনি, বন্ধুসভার সদস্য স্বেচ্ছাসেবক কলিন্স পার্থ এবং বন্ধুসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সফিক মন্ডল।
সঙ্গীত পরিবেশন করেন বন্ধুসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসরীন আক্তার ইতি, বন্ধুসভার সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী সজিব শাহরিয়ার, বন্ধুসভার সদস্য হৃদয় সূত্র ধর ও সুপর্ণা বিশ্বাস। সব শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদের নিয়ে বন্ধুসভার সদস্যরা কেক কাটেন এবং সকলকে মিষ্টিমুখ করানো হয়। বন্ধুসভার সভাপতি জীবন চক্রবর্তী উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্ত ঘোষণা করেন।