১১:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২১ এপ্রিল সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ দিবসে গোয়ালন্দ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ সম্পন্নের দাবী

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানাতে ২০১৫ সাল থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বেসরকারী উদ্যোগে পালিত হচ্ছে সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ দিবস। এ উপলক্ষে রোববার শহীদদের স্মরণে স্মৃতিচারণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অর্থের অভাবে বন্ধ থাকা স্মৃতিস্তম্ভ ভাষ্কর্য নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন এবং সরকারিভাবে প্রতিরোধ দিবস পালনের দাবী জানান বক্তারা।

গোয়ালন্দ সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ স্মৃতি মুক্তিযুদ্ধ ভাষ্কর্য স্থান উপজেলার উজানচর বাহাদুরপুর গ্রামে ভাস্কর্য নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী জুয়েল বাহাদুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার (বিএলএফ) ও রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার।

বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ীর মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বাকাউল আবুল হাসেম, যুদ্ধকালীন কমান্ডার (বিএলএফ) সিরাজ আহমেদ, গোয়ালন্দ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুস সামাদ মোল্যা, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. ইউনুস মোল্যা, সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মুহিত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম খান, গোয়ালন্দ পৌরসভার স্থানীয় ৯নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি, সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম, সাংবাদিক রাশেদুল হক রায়হান প্রমূখ।

ভাষ্কর্য নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক জুয়েল বাহাদুর বলেন, ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল প্রতিরোধ যুদ্ধকালীন সময় সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে যুদ্ধস্থল বাহাদুরপুর গ্রামে ২০১৫ সাল থেকে সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। ২০১৮ সালে আমার বাবা ইউসুফ আলীর দেয়া জমিতে জেলা পরিষদে ২ লাখ টাকা ব্যায়ে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পুরো কাজ শেষ করতে ১৪-১৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। অর্থের অভাবে নির্মাণকাজ অসম্পন্ন অবস্থায় আছে। অথচ সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত দিবসটি পালন করা হচ্ছে না।

রাজবাড়ীর যুদ্ধকালীন কমান্ডার বাকাউল আবুল হাসেম ও সিরাজ আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের মধ্যে ২১ এপ্রিল সবচেয়ে ঘটনাবহুল ঘটনা। এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী প্রথম গোয়ালন্দ আক্রমণ করে গোয়ালন্দ বাজারসহ কয়েকটি গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। শহীদ হন অনেকে। দিনটি স্মরণে সম্মুখযুদ্ধ স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ বা ভাষ্কর্য নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন হওয়া দরকার। কাজটি হলে এই প্রজন্মের সকলে তখনকার বিষয়টি মনে ধারণ করতে পারবে। একই সাথে দিবসটিও সরকারিভাবে পালনের দাবী জানাচ্ছি।

১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল বুধবার ভোরে বৃষ্টির মধ্যে পাকিস্তানের সুসজ্জিত বাহিনী নদীপথে আরিচাঘাট থেকে গানবোট, কে-টাইপ ফেরি, স্পীডবোট ও হেলিকপ্টার যোগে হানাদার বাহিনী তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমা বাহাদুরপুর গ্রামে নামে। মুক্তিকামী মানুষ, ইপিআর, আনসার, ইপিআর কমান্ডার এসডিও শাহ ফরিদ, মুক্তিবাহিনীর তৎকালীন থানা ছাত্রলীগ সভাপতি ফকীর আব্দুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক কেরামত আলী প্রামানিকের নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়। শহীদ হন ফকির মহিউদ্দিন, ছবেদ আলী, হাবিল মন্ডল, কবি তোফাজ্জল হোসেন, জিন্দার আলী মৃধা, নায়েব আলী বেপারী, মতিয়ার রহমান, জয়নদ্দিন ফকির, কাদের মোল্লা, হামেদ শেখ, কানাই শেখ, ফুলবরু বেগম, মোলায়েম সরদার, বরুজান বিবি, আমজাদ হোসেন, মাধব বৈরাগী, আহাম্মদ আলী ম-ল, খোদেজা বেগম, করিম মোল্যা, আমোদ শেখ, কুরবান শেখ, মোকসেদ শেখ, নিশিকান্ত রায়, মাছেম শেখ, ধলাবরু বেগম, আলেয়া খাতুন, বাহেজ পাগলাসহ অনেকে।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

প্রতিক বরাদ্দ পেয়েই গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণা শুরু

২১ এপ্রিল সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ দিবসে গোয়ালন্দ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ সম্পন্নের দাবী

পোস্ট হয়েছেঃ ০৯:৫৯:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ এপ্রিল ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দঃ ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মরণে, মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে জানাতে ২০১৫ সাল থেকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে বেসরকারী উদ্যোগে পালিত হচ্ছে সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ দিবস। এ উপলক্ষে রোববার শহীদদের স্মরণে স্মৃতিচারণ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অর্থের অভাবে বন্ধ থাকা স্মৃতিস্তম্ভ ভাষ্কর্য নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন এবং সরকারিভাবে প্রতিরোধ দিবস পালনের দাবী জানান বক্তারা।

গোয়ালন্দ সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ স্মৃতি মুক্তিযুদ্ধ ভাষ্কর্য স্থান উপজেলার উজানচর বাহাদুরপুর গ্রামে ভাস্কর্য নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী জুয়েল বাহাদুর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার (বিএলএফ) ও রাজবাড়ী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফকীর আব্দুল জব্বার।

বক্তব্য রাখেন রাজবাড়ীর মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বাকাউল আবুল হাসেম, যুদ্ধকালীন কমান্ডার (বিএলএফ) সিরাজ আহমেদ, গোয়ালন্দ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আব্দুস সামাদ মোল্যা, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. ইউনুস মোল্যা, সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মুহিত, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম খান, গোয়ালন্দ পৌরসভার স্থানীয় ৯নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি, সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম, সাংবাদিক রাশেদুল হক রায়হান প্রমূখ।

ভাষ্কর্য নির্মাণ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক জুয়েল বাহাদুর বলেন, ১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল প্রতিরোধ যুদ্ধকালীন সময় সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে যুদ্ধস্থল বাহাদুরপুর গ্রামে ২০১৫ সাল থেকে সম্মুখযুদ্ধ ও প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। ২০১৮ সালে আমার বাবা ইউসুফ আলীর দেয়া জমিতে জেলা পরিষদে ২ লাখ টাকা ব্যায়ে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পুরো কাজ শেষ করতে ১৪-১৫ লাখ টাকা প্রয়োজন। অর্থের অভাবে নির্মাণকাজ অসম্পন্ন অবস্থায় আছে। অথচ সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত দিবসটি পালন করা হচ্ছে না।

রাজবাড়ীর যুদ্ধকালীন কমান্ডার বাকাউল আবুল হাসেম ও সিরাজ আহমেদ বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের মধ্যে ২১ এপ্রিল সবচেয়ে ঘটনাবহুল ঘটনা। এই দিনে পাক হানাদার বাহিনী প্রথম গোয়ালন্দ আক্রমণ করে গোয়ালন্দ বাজারসহ কয়েকটি গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। শহীদ হন অনেকে। দিনটি স্মরণে সম্মুখযুদ্ধ স্থানে স্মৃতিস্তম্ভ বা ভাষ্কর্য নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন হওয়া দরকার। কাজটি হলে এই প্রজন্মের সকলে তখনকার বিষয়টি মনে ধারণ করতে পারবে। একই সাথে দিবসটিও সরকারিভাবে পালনের দাবী জানাচ্ছি।

১৯৭১ সালের ২১ এপ্রিল বুধবার ভোরে বৃষ্টির মধ্যে পাকিস্তানের সুসজ্জিত বাহিনী নদীপথে আরিচাঘাট থেকে গানবোট, কে-টাইপ ফেরি, স্পীডবোট ও হেলিকপ্টার যোগে হানাদার বাহিনী তৎকালীন গোয়ালন্দ মহকুমা বাহাদুরপুর গ্রামে নামে। মুক্তিকামী মানুষ, ইপিআর, আনসার, ইপিআর কমান্ডার এসডিও শাহ ফরিদ, মুক্তিবাহিনীর তৎকালীন থানা ছাত্রলীগ সভাপতি ফকীর আব্দুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক কেরামত আলী প্রামানিকের নেতৃত্বে পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে প্রতিরোধ যুদ্ধ হয়। শহীদ হন ফকির মহিউদ্দিন, ছবেদ আলী, হাবিল মন্ডল, কবি তোফাজ্জল হোসেন, জিন্দার আলী মৃধা, নায়েব আলী বেপারী, মতিয়ার রহমান, জয়নদ্দিন ফকির, কাদের মোল্লা, হামেদ শেখ, কানাই শেখ, ফুলবরু বেগম, মোলায়েম সরদার, বরুজান বিবি, আমজাদ হোসেন, মাধব বৈরাগী, আহাম্মদ আলী ম-ল, খোদেজা বেগম, করিম মোল্যা, আমোদ শেখ, কুরবান শেখ, মোকসেদ শেখ, নিশিকান্ত রায়, মাছেম শেখ, ধলাবরু বেগম, আলেয়া খাতুন, বাহেজ পাগলাসহ অনেকে।