নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় মো. রাশেদুল ইসলাম (৩৩) নামের এক যুবককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার একদিন পর পাংশা মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের বাবা কিয়ামদ্দিন শেখ বাদী হয়ে রোববার রাতে পাংশা মডেল থানায় ২৭জনকে এজাহারভুক্ত এবং অজ্ঞাত ১২জনকে আসামি করে মামলা করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
নিহত রাশেদুল ইসলাম স্থানীয়ভাবে যুবদলকর্মী এবং পেশায় কৃষক ছিলেন। তিনি পাংশা উপজেলার পাট্টা ইউনিয়নের উত্তর পাট্টা গ্রামের কিয়ামদ্দিন শেখের ছেলে। গত শনিবার (৩ মে) গুরুতর জখম অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মারা যায় সে। রোববার (৪ মে) সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়। দাফন শেষে রাতেই পাংশা মডেল থানায় রাশেদুলের বাবা কিয়ামদ্দিন শেখ মামলা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, বরিশাল অঞ্চলে প্রায় ২২দিন ধানা কাটা শেষে শুক্রবার (২ মে) রাতে ট্রাকভর্তি ভাগের ধান শ্রমিকদের সরদার পাংশার মৌরাট ইউনিয়নের রুপিয়াট গ্রামের কুদ্দুসের বাড়িতে রাখেন। পরদিন শনিবার সকাল ৯টার দিকে ভাগের ধান আনতে কুদ্দুসের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে রাশেদুল। পথে পাট্টার নিভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে পৌছলে আগে উত্তর বিশ্বাস মাজাইল গ্রামের আকিদুল ইসলামের নেতৃত্বে রাশেদুলের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাশেদুলের দুই পায়ের রগ কেটে দেয় এবং দুই হাতের কব্জিতে মারাত্মক জখম করে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। এসময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা সটকে পড়ে। পরে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর দেড়টার দিকে রাশেদুলের মৃত্যু হয়।
এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাকিব বিশ্বাস (২০) নামের এক তরুণকে আটক করে। তাঁকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে পুলিশ রোববার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করে। এ ঘটনার পর চরম উত্তেজনাকর এবং থমথমে অবস্থা বিরাজ করলে এলাকায় পাংশা মডেল থানার পাশাপাশি রাজবাড়ী পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
পাংশা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, হামলাকারীদের সাথে রাশেদুলের স্থানীয় বিএনপির অভ্যন্তরীন রাজনীতি নিয়ে অনেক আগে থেকে বিরোধ ছিল। বিরোধের জেরে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থল থেকে খালিদ নামের একজনকে আটক করা হয়। পরে জানা যায় আটককৃত তরুণের নাম সাকিব বিশ্বাস। সাকিবকে ৫৪ ধারায় আটক দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রোববার রাতে নিহত রাশেদুলের বাবা কিয়ামদ্দিন শেখ এজারহারে ২৭জনকে আসামি করেন। আটককৃত সাকিব বিশ্বাস এজাহারভুক্ত ২৫ নম্বর আসামি। সাকিবকে ওই মামলায় শ্যোন এরেষ্ট দেখানো হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় আজ সোমবার সকাল ৮টার পর মোতায়েনকৃত অতিরিক্ত পুলিশ সরিয়ে আনা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।