নিজস্ব প্রতিবেদক, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ গুলিভর্তি পিস্তলসহ মো. আবুল হাসেম সুজন (৫৩) নামের জেলা যুবদলের সাবেক এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লির একটি বাড়ি থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। এসময় তাঁর কাছ থেকে তিন রাউন্ড গুলি সহ একটি বিদেশী পিস্তল জব্দ করা হয়।
আবুল হাসেম সুজন রাজবাড়ী সদর উপজেলার মাটিপাড়া এলাকার বড়মুরারীপুর গ্রামের মৃত জনাব আলী মিয়ার ছেলে। পেশায় তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার। এছাড়া তিনি রাজবাড়ী জেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের সাবেক সভাপতি এবং জেলা বিএনপির কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
যুবদলের সভাপতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ী জেলা বিএনপির বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম শিকদার পিন্টু। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে রাজবাড়ী জেলা যুবদলের কমিটিতে আবুল হাসেম সুজন সভাপতি এবং তিনি (রেজাউল করিম পিন্টু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। যদিও পরবর্তীতে আবুল হাসেম সুজন ২০১৯ সালে যুবদল ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
পুলিশ জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে আবুল হাসেম সুজন দৌলতদিয়া যৌনপল্লির ভিতর শনিবার মধ্যরাত থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আইয়ুব আলী মেম্বারের বাড়ির ভাড়াটিয়া সীমা ওরফে লাকীর ঘরে অবস্থান করছে। তাঁর কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র বের করে কয়েকজনকে দেখান। অনেকটা বেশামাল অবস্থায় কাছে থাকা গুলিভর্তি পিস্তলটি বের করে অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। পরে রাত পৌনে ৪টার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ওই বাড়ি ঘেরাও করে তাঁকে আটক করেন। এ সময় তাঁর কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, ৩ রাউন্ড ৭.৬৫ গুলি জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা (নং-২৫) দায়ের করেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম বলেন, শনিবার রাতে আবুল হাসেম সুজন যৌনপল্লির যৌনকর্মী সীমা ওরফে লাকীর ঘরে আসেন। তাঁর কাছে গুলিসহ পিস্তল রয়েছে যা তিনি বার বার প্রদর্শন করে সবাইকে বুঝাচ্ছিলেন। এমনকি তিনি সকলের সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যৌনকর্মীরা। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে অস্ত্রটি লাইসেন্সকৃত এবং সরকারি বড় বড় কর্মকর্তা তাঁর আত্মীয় বলে পরিচয় দিচ্ছিলেন। আমাদের কাছে মনে হয়েছে তিনি স্বাভাবিক ছিলেন না। পরে কৌশলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।