০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজবাড়ী জুট মিল চলছে, উৎপাদন কমেছে প্রায় অর্ধেক

ইমরান হোসেনঃ ‘‘রাজবাড়ী জুট মিল’’ জেলার সবচেয়ে বড় পাটজাত পন্য উৎপাদনকারী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এখানে সব ধরনের পাটজাত পন্য উৎপাদিত হয়। এখানে উন্নত মানের পাটের সুতা, ডাইভার্সিফাইড প্রোডাক্ট জুট ক্লথ (চট) ও ব্যাগ উৎপাদন হয়ে থাকে। উৎপাদিত শতভাগ পন্যের পুরোটাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।

করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এক মাস বন্ধের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবার মিলের উৎপাদন শুরু হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে সমস্যা হলেও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও বেতন সময়মত পরিশোধসহ সব সুবিধা দিয়ে আসছে। করোনাকালীন সমস্যা কাটিয়ে ঘুরে দাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি, যা অনেকাংশে প্রশংসার দাবিদার।

২০০৮ সালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলাদীপুরে স্থাপিত জুটমিলটি ২০০৯ সালে পাটজাত পন্য উৎপাদন শুরু করে। প্রায় ১১ একর আয়োতনের এ মিলের পরিধি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। মিলের সামনের দু-পাশে সৌন্দর্যবর্ধনে বিভিন্ন ফল-ফুলের গাছ রোপন, লেক তৈরী এবং সুন্দর সুসজ্জিত কাঁচের তৈরী মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে জুটমিলের নান্দনিকতা বেড়েছে, সাথে বেড়েছে সুনাম। মসজিদটি সকল ধর্মপ্রান মুসলমানদের জন্য রয়েছে উন্মুক্ত। বর্তমানে মিলটিতে তিনটি ইউনিটে উৎপাদিত হয়-ইয়ার্ণ হাই কোয়ালিটি, হেসিয়ান সেকিং ইয়ার্ণ, হেসিয়ান সিবিসি ক্লথ, সিআরটি, সিআর এক্স, সিআরপি, এক্স মিনিস্টার, সিবিসি ক্লথ, ফুল ব্রাইট হেসিয়ান ক্লথ ও ফুলব্রাইট এশিয়ান ব্যাগ এবং কালার ইয়ার্ণ পাটজাত পন্য।

যার পুরোটাই ইউএস, ইরান, হল্যান্ড, নেদারল্যান্ড ও তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত পন্য রপ্তানি করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের আগে প্রতিদিন ৭৫ থেকে ৮০ মেট্রিক টন পণ্য উৎপাদন হলেও বর্তমানে শ্রমিক কর্মচারী সংকট ও কোভিড-১৯ সংক্রমনে চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় আগের তুলনায় উৎপাদনে ভাটা পরেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদন বাড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমানে এ জুট মিলে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছে।

শ্রমিক ও কর্মচারীরা বলেন, রাজবাড়ী জুট মিলটি করোনা ভাইরাসে প্রায় এক মাস বন্ধ ছিল। মিলটি খোলার পর এখানে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে মিলে প্রবেশ ও সামাজিক দুরত্ব রেখে উৎপাদন কাজ করতে হয় তাদের। স্বাস্থ্যবিধি মানার সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে কর্তৃপক্ষ। করোনা ভাইরাসের মধ্যেও মিল কর্তৃপক্ষ তাদের পারিশ্রমিক বকেয়া রাখেনি। এখানে কাজ করে তারা তাদের পরিবার নিয়ে ভালো আছেন বলে জানান।

রাজবাড়ী জুটমিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মকদুম আহম্মেদ পলাশ বলেন, যেহেতু উৎপাদিত পাটজাত দ্রব্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। তাই করোনাকালীন সময়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। নানা সমস্যার মধ্যেও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। তবে উৎপাদন আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। করোনার অসংগতি কাটাতে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকারের আরো বেশি সহযোগীতায় প্রয়োজন বলে মনে করেন তাঁরা।

রাজবাড়ী জুটমিলের উপ-মহাব্যবস্থাপক আলী আহম্মেদ বলেন, রাজবাড়ী জুট মিলস লিঃ শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটির সময় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম এক মাস বন্ধ ছিল। এখন শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিলের উৎপাদন আবার শুরু হয়েছে। শ্রমিক উপস্থিতি কম ও রপ্তানি চাহিদা ঘাটতিতে উৎপাদন আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। উৎপাদিত পাটজাত পন্য ইরান, তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত করে শ্রমিকদের কাজে নিয়োজিত করছেন প্রতিষ্ঠানটি।

ট্যাগঃ
রিপোর্টারের সম্পর্কে জানুন

Rajbari Mail

জনপ্রিয় পোস্ট

রাজবাড়ীতে শ্বাশুরীকে হত্যার দায়ে দুই জনের যাবোজ্জীবন একজন খালাস

স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজবাড়ী জুট মিল চলছে, উৎপাদন কমেছে প্রায় অর্ধেক

পোস্ট হয়েছেঃ ০৮:২৬:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুন ২০২০

ইমরান হোসেনঃ ‘‘রাজবাড়ী জুট মিল’’ জেলার সবচেয়ে বড় পাটজাত পন্য উৎপাদনকারী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। এখানে সব ধরনের পাটজাত পন্য উৎপাদিত হয়। এখানে উন্নত মানের পাটের সুতা, ডাইভার্সিফাইড প্রোডাক্ট জুট ক্লথ (চট) ও ব্যাগ উৎপাদন হয়ে থাকে। উৎপাদিত শতভাগ পন্যের পুরোটাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে।

করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। এক মাস বন্ধের পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবার মিলের উৎপাদন শুরু হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে সমস্যা হলেও শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও বেতন সময়মত পরিশোধসহ সব সুবিধা দিয়ে আসছে। করোনাকালীন সমস্যা কাটিয়ে ঘুরে দাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি, যা অনেকাংশে প্রশংসার দাবিদার।

২০০৮ সালে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলাদীপুরে স্থাপিত জুটমিলটি ২০০৯ সালে পাটজাত পন্য উৎপাদন শুরু করে। প্রায় ১১ একর আয়োতনের এ মিলের পরিধি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। মিলের সামনের দু-পাশে সৌন্দর্যবর্ধনে বিভিন্ন ফল-ফুলের গাছ রোপন, লেক তৈরী এবং সুন্দর সুসজ্জিত কাঁচের তৈরী মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এতে জুটমিলের নান্দনিকতা বেড়েছে, সাথে বেড়েছে সুনাম। মসজিদটি সকল ধর্মপ্রান মুসলমানদের জন্য রয়েছে উন্মুক্ত। বর্তমানে মিলটিতে তিনটি ইউনিটে উৎপাদিত হয়-ইয়ার্ণ হাই কোয়ালিটি, হেসিয়ান সেকিং ইয়ার্ণ, হেসিয়ান সিবিসি ক্লথ, সিআরটি, সিআর এক্স, সিআরপি, এক্স মিনিস্টার, সিবিসি ক্লথ, ফুল ব্রাইট হেসিয়ান ক্লথ ও ফুলব্রাইট এশিয়ান ব্যাগ এবং কালার ইয়ার্ণ পাটজাত পন্য।

যার পুরোটাই ইউএস, ইরান, হল্যান্ড, নেদারল্যান্ড ও তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত পন্য রপ্তানি করা হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে করোনা ভাইরাস সংক্রমনের আগে প্রতিদিন ৭৫ থেকে ৮০ মেট্রিক টন পণ্য উৎপাদন হলেও বর্তমানে শ্রমিক কর্মচারী সংকট ও কোভিড-১৯ সংক্রমনে চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় আগের তুলনায় উৎপাদনে ভাটা পরেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে উৎপাদন বাড়ানোর জোর প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমানে এ জুট মিলে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছে।

শ্রমিক ও কর্মচারীরা বলেন, রাজবাড়ী জুট মিলটি করোনা ভাইরাসে প্রায় এক মাস বন্ধ ছিল। মিলটি খোলার পর এখানে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে মিলে প্রবেশ ও সামাজিক দুরত্ব রেখে উৎপাদন কাজ করতে হয় তাদের। স্বাস্থ্যবিধি মানার সব ধরনের ব্যবস্থা রেখেছে কর্তৃপক্ষ। করোনা ভাইরাসের মধ্যেও মিল কর্তৃপক্ষ তাদের পারিশ্রমিক বকেয়া রাখেনি। এখানে কাজ করে তারা তাদের পরিবার নিয়ে ভালো আছেন বলে জানান।

রাজবাড়ী জুটমিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মকদুম আহম্মেদ পলাশ বলেন, যেহেতু উৎপাদিত পাটজাত দ্রব্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়। তাই করোনাকালীন সময়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। নানা সমস্যার মধ্যেও সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। তবে উৎপাদন আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। করোনার অসংগতি কাটাতে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকারের আরো বেশি সহযোগীতায় প্রয়োজন বলে মনে করেন তাঁরা।

রাজবাড়ী জুটমিলের উপ-মহাব্যবস্থাপক আলী আহম্মেদ বলেন, রাজবাড়ী জুট মিলস লিঃ শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠান। করোনাকালীন সময়ে সরকার ঘোষিত সাধারন ছুটির সময় প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম এক মাস বন্ধ ছিল। এখন শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিলের উৎপাদন আবার শুরু হয়েছে। শ্রমিক উপস্থিতি কম ও রপ্তানি চাহিদা ঘাটতিতে উৎপাদন আগের চাইতে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। উৎপাদিত পাটজাত পন্য ইরান, তার্কিসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত করে শ্রমিকদের কাজে নিয়োজিত করছেন প্রতিষ্ঠানটি।